নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসক। আগামীকাল রোববার তাকে সিসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হবে।
শনিবার রাতে ল্যাবএইড হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ডা. বরেন চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, মেয়র আইভী এখন আশঙ্কামুক্ত। তবে তাকে কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে হবে।
গত বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি আছেন তিনি। এর আগে চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় আনা হয় তাকে।
ডা. বরেন চক্রবর্তী বলেন, ‘আজ শনিবার সকালে আমরা দ্বিতীয়বারের মতন মেয়র আইভীর সিটি স্ক্যান করিয়েছি। আমরা জেনেছি তার মস্তিষ্কের ক্ষতটি খারাপের দিকে যায়নি। যথেষ্ট স্থিতিশীল রয়েছে। তার শারীরিক অবস্থারও যথেষ্ট উন্নতি হয়ছে।’
আইভী অনেক কিছুই মনে করতে পারছেন না- এমন একটা বিষয় জানানো হয়েছিল গতকাল। সে ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানসিকভাবে তিনি এখন স্থিতিশীল। হঠাৎ স্ট্রেসের কারণে অনেক কিছু চিনতে না পারার বিষয়টি হয়ে থাকতে পারে।
কবে আইভী হাসপাতাল ছাড়তে পাড়বেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা.বরেন চক্রবর্তী বলেন, আমরা আরো দুইতিন দিন তাকে পর্যাবেক্ষণে রাখব। তারপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
মঙ্গলবারের সংঘর্ষে আহত আইভী বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বেশি অসুস্থ অনুভব করেন। এরপর কয়েকবার বমি করলে তাকে স্যালাইন দেয়া হচ্ছিলো। তবুও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিয়ে আসার পরামর্শ দেন। এরপর বিকাল ৪ টায় মেয়র আইভীকে নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার দিকে রওনা হয়।
এর আগে সংঘর্ষের বিষয়ে বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছিলেন, হত্যার উদ্দেশ্যেই তার ওপর হামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন: আধাঘণ্টা রাস্তায় পড়ে ছিলাম, তখন পুলিশ আসতে পারতো। ত্বকী হত্যার ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আন্দোলনে তো আমিই ছিলাম। তখন তো পুলিশ চলে আসতো মাঝখানে। একতরফা এভাবে কেউ মার খাইনি।
‘‘আমার দেড়শ’ থেকে দুইশ’ কর্মীকে আহত করলো। আমার কর্মীদের সবার মাথা ফাঁটা। আমার ভাই আহত, আমি হাঁটতে পারি না। প্রশাসন আমাকে ইনফর্ম করতে পারতো। বলতে পারতো, ওখানে এত বড় ঘটনা ঘটতে পারে, আপনি যাবেন না ওখানে। আমরা যারা মানুষের জন্য কাজ করি তারা জন্মমৃত্যু নিয়েই কাজ করি।’’
নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সাংসদ শামীম ওসমান ও মেয়র আইভী সমর্থকদের সংঘর্ষে মেয়র আইভী, সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হয়। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়াসহ দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ দুই শতাধিক শর্ট গানের ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর চাষাঢ়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেসময় অস্ত্র উঁচিয়ে তেড়ে গেলে গণধোলাইয়ের শিকার হন শামীম ওসমানের সমর্থক নিয়াজুল।