তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ও চৌকস নেতৃত্বে পাবনার সাঁথিয়ায় খুনের আসামি মো. মারুফ শেখকে গ্রেপ্তার করাসহ ঘটনার মূলোৎপাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), পাবনা জেলা।
আসামি মারুফ শেখ ইতোমধ্যে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত বুধবার রাতে পাবনা জেলার পিবিআইয়ের একটি দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাকে সাভারের শাহীপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
চলতি বছরের মার্চের ৭ তারিখে পাবনা জেলার সাঁথিয়ার রামচন্দ্রপুরে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাকে কেন্দ্র করে নিজ বাড়িতে মনির খান (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন কান্তি চৌধুরী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: সাঁথিয়া থানার রামচন্দ্রপুর বাজারে আসামি মারুফ শেখের একটি চাউলের মিল আছে। কিন্তু তার চাউলের মিলের জন্য বৈধ কোনো বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। ওই বাজারে মনির ও তার ভাইদের একটি মার্কেট আছে। সেখান থেকে আসামি মারুফ শেখ বিদ্যুতের অবৈধ সংযোগ নিয়ে তার চাউলের মিল পরিচালনা করছিল।
‘কিন্তু দীর্ঘদিনের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় নিহত মনিরের ভাই মারুফ শেখের চাউলের মিলের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। সে কারণেই উভয়ের মধ্যে শত্রুতার সৃষ্টি হয়। পরে চলতি বছরের ৭ মার্চ দুপুরে মারুফ শেখসহ অন্যান্যরা মনিরের বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। হামলায় মনিরসহ তার বাড়ির একাধিক সদস্য গুরুতর আহত হয়।’
তিনি বলেন: ওই ঘটনায় আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে সাঁথিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্ত মনির খানের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে সময়ে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় পরদিন ৮ মার্চ রাতে তিনি মারা যান।
সুমন কান্তি চৌধুরী বলেন: তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত ব্যক্তিকে শনাক্ত করে পিবিআই। বৃহস্পতিবার আসামিকে আদালতে সোর্পদ করা হয়। আদালতে মারুফ শেখ নিহত মনির খানকে হত্যার ঘটনায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়: চলতি বছরের ৭ মার্চ দুপুরে নিহত মনির খানকে বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন করাকে কেন্দ্র করে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে নিজ বাড়িতে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিবেশী মারুফ শেখ। এ ঘটনায় নিহত মনিরের ভাই মোত্তালিব খান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিল।
সাঁথিয়া থানা পুলিশ ওই মামলার তদন্ত করে কোনো কূলকিনারা করতে না পারায় মামলার তদন্তভার পিবিআই, পাবনা জেলার ওপর অর্পণ করা হয়।
মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) সবুজ আলী জানান: গ্রেপ্তার মূল আসামি ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পলাতক ছিল। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তার অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।