এক বছরের নির্বাসন কাটিয়ে অস্ট্রেলিয়া দল তথা বিশ্বকাপ দলে ফিরেছেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নার। এ দুই ব্যাটসম্যানের দলে ফেরাকে অন্য দলগুলোর জন্য অশুভ সংকেত হিসেবেই দেখছেন অজিদের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ।
সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচের সময় বল টেম্পারিংয়ের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক বছরের নিষেজ্ঞায় ছিলেন স্মিথ-ওয়ার্নার। নির্বাসন থেকে ফিরে সরাসরি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছেন তারা।
আন্তর্জাতিক নির্বাসন শেষ হতে না হতেই আবারও ইনজুরির কবলে পড়েছিলেন স্মিথ-ওয়ার্নার। দুজনকেই কনুইতে অস্ত্রোপচার করতে হয়। তবে সবকিছু কাটিয়ে নিজেদের চেনাছন্দে ফিরেছেন তারা। আইপিএলে জাঁদরেল পারফর্ম করে নিজের সক্ষমতার প্রমাণ রেখেছেন ওয়ার্নার। লিগে ১২ ম্যাচ খেলে এক সেঞ্চুরি ও আটটি হাফসেঞ্চুরিতে করেন ৬৯২ রান।
আইপিএলে ওয়ার্নারের মতো পারফরম্যান্স হয়তো করতে পারেননি স্মিথ। তবে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে ব্যাটের ঝলক দেখিয়েছেন তিনি। ওই দুই ম্যাচে তার রান যথাক্রমে ৮৯ ও ৯১। দুটি ম্যাচেই অপরাজিত থেকে এই রান করেন স্মিথ।
দুই বাঘা ব্যাটসম্যান দলে ফেরায় প্রতিপক্ষরা ভয়ে থাকবে বলেই মনে করেন ওয়াহ। আইসিসিকে সাক্ষাতকারে বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বলেছেন, ‘প্রত্যেকটা দলই অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে চিন্তায় থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার ক্ষমতা সম্পর্কে সবাই অবগত। শেষ ১২ মাস অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে একটা টালমাটাল অবস্থা গেছে, তবে এখন সেটা একপাশে সরিয়ে রাখা হয়েছে। আমার আমাদের সেরা দুই খেলোয়াড় স্মিথ ও ওয়ার্নারকে পেয়ে গেছি।’
বর্তমানসহ বিশ্বকাপে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। সেই খ্যাতির কথা তো সত্যই। এরমধ্যে আবার বিশ্বকাপের আগে তারা সঠিক সময়ে আসল খেলাটা তুলে ধরতে পারছে। ২০১৮’র শুরুতে ১৮টি ওয়ানডের মধ্যে মাত্র পাঁচটা জিতেছিল অজিরা। কিন্তু বছরের শেষদিকে ভারত সফর দিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়।
বিরাট কোহলির দলের বিপক্ষে ০-২তে পিছিয়ে থেকেও হ্যাটট্রিক জয়ে শেষ পর্যন্ত পাঁচ ম্যাচের সিরিজ জিতে নেয় ৩-২ ব্যবধানে। ভারতের পর তাদের প্রতিবেশি পাকিস্তানকে ৫-০তে হোয়াইটওয়াশ করে অ্যারন ফিঞ্চের দল।
অস্ট্রেলিয়া সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে ওয়াহ’র ভাষ্য, ‘তাদের পারফরম্যান্স বেশ খারাপ ছিল, কিন্তু সেটা সাময়িক। তারা সবশেষ টানা আটটি ম্যাচ জিতেছে। সেই সঙ্গে স্মিথ-ওয়ার্নারকেও দলে পেয়েছে। আর এটাই অন্য দলগুলোর জন্য অশুভ সংকেত। কারণ, প্রতিপক্ষরা জানে অস্ট্রেলিয়ার শক্তি কতখানি।’
অস্ট্রেলিয়া এই বিশ্বকাপে ফেভারিট কিনা সেই তর্কে যাননি ওয়াহ। তবে বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে অন্যতম একটা দল অস্ট্রেলিয়া, সম্ভবত ফেভারিট নাও হতে পারে। কিন্তু অন্য দলগুলো তাদের ভয় পাবে। কারণ, তারা বেশ ক্ষতি করতে পারে। আমি মনে করি, অস্ট্রেলিয়া টুর্নামেন্টে সত্যিই দীর্ঘপথ যেতে পারে।’
হলুদ জার্সিতে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ জেতা ওয়াহ কথা বলেছেন উড়তে থাকা ইংল্যান্ডকে নিয়েও, ‘আমার মতে, ইংল্যান্ড ফেভারিট। গত কয়েক বছরে তাদের পারফরম্যান্স অসাধারণ। তারা ঘরের মাঠে খেলবে, এজন্য অবশ্য বাড়তি চাপ থাকবে। তবে তারা দারুণ একজন কোচ (ট্রেভর বেলিস) পেয়েছে। আমার মতে, ইংল্যান্ড সম্ভবত ফেভারিট। আর ফেভারিটের তালিকায় অস্ট্রেলিয়া-ভারত দ্বিতীয় স্থানে।’