বছরের বেশীরভাগ সময় সাতক্ষীরা শহরের তুফান মোড়ে অবস্থিত সংগীতা সিনেমা হলটি দর্শক শূন্য থাকে। কিন্তু ঈদ এলেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। প্রতিবারের মতো এবার ঈদেও দর্শকেরা হলমুখী হওয়ায় লাভের আশা করছে হল কর্তৃপক্ষ।
এই প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত শাকিব খান-বুবলী অভিনীত ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’। সিনেমা হলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল হক জানান, রোজার ঈদে ‘পাসওয়ার্ড’ দিয়ে বাম্পার ব্যবসা হয়েছে।
এরপর কোরবানির ঈদ পর্যন্ত কলকাতার ছবি এবং দেশের কিছু পুরাতন ছবি দিয়ে হল সচল রাখতে হয়েছে। সিনেমা হলে আসার আগেই কলকাতার যেসব ছবি এদিকের হলে আসে, সেগুলো মানুষ মোবাইল বা কম্পিউটার দোকান থেকে দেখে ফেলে। আর দেশের পুরোনো ছবিগুলো প্রদর্শন করায় দর্শক টানতে পারেনি। এ কারণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।
এবার ঈদে ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ ছবি প্রদর্শন করে দর্শকের উপস্থিতি বেশ ভালো পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি। তবে ‘পাসওয়ার্ড’ যেভাবে শুরু থেকেই ব্যবসা করেছিল, মানুষ হুমড়ি খেয়ে দেখেছিল তেমনটা এখনও হয়নি। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কোরবানির ঈদে তুলনামূলক দর্শক কম থাকে। তাছাড়া এবার ঈদের দিন থেকেই বৃষ্টি বাগড়া দিয়েছে।
সবকিছুর পরেও যে মানুষগুলো সিনেমা হলে এসেছে, তারা শাকিব খানের ছবি বলেই দেখতে এসেছে বলে উল্লেখ করেন সংগীতা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক।
এদিকে, সংগীতা সিনেমা হলের স্টাফ ম্যানেজার শরিফুল ইসলাম জানান, ঈদের প্রথমদিনে দর্শক হাউসফুল ছিল না। পরদিন বিকেল ও সন্ধ্যার শোতে দেখা যায় হাউজফুল। এ কারণে অতিরিক্ত চেয়ার বসানো হয়েছিল। পরবর্তীতে হাউসফুল না হলেও ব্যবসা একেবারে মন্দ হয়নি।
দ্বিতীয় সপ্তাহেও চলছে ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’। এর ফলে বিগত দিনের আর্থিক ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, আগের তুলনায় এবার নারী দর্শকও ছবি দেখতে এসেছে সিনেমা হলে। শাকিব খানের সঙ্গে সঙ্গে নায়িকা বুবলীর অভিনয়ও ভালো লেগেছে দর্শকদের। সামাজিক বিভিন্ন ইস্যু নির্ভর ছবি হিসেবে একেবারে খারাপ না।
শরিফুল ইসলাম বলেন, একমাত্র শাকিব খানের সিনেমা এলেই হাউজফুল-এর দেখা মেলে। তার ছবি দেখেই দর্শক পূর্ণ বিনোদন পায়। কলকাতার নতুন ছবি আমদানি করে প্রদর্শনের চেয়ে শাকিব খানের পুরাতন ছবিতে দেখতে মানুষ বেশি আসে।
সিনেমা প্রদর্শনকালে পুরোটা সময় জুড়ে দর্শকদের চিৎকার চেঁচামেচিসহ হুল্লোড়ে মেতে থাকেন।
সংগীতা সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ মনে করেন, বাংলাদেশের সিনেমা মানেই শাকিব খান। নিকট অতীতে এই হলে রেকর্ড পরিমাণ ব্যবসা করা ছবিগুলো শাকিব খানের। ‘শিকারী’, ‘নবাব’, ‘ভাইজান এলো রে’, ‘পাসওয়ার্ড’ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
এমন ছবি বছরজুড়ে প্রদর্শন হলে সিনেমা হল মালিকেরা লাভবান হবেন। দর্শকেরা পাবেন ভালো বিনোদন।