পাঁচ বছরের শিশু সানেন এখনো বুঝে উঠতে পারেনি মা হারানোর বুক ভাঙা ব্যথা। যদিও যত সময় গড়াচ্ছে তার আদরের মামনি শিলা কেন আসছেন না এই আকুলতায় ব্যাকুল হচ্ছে এই অবুঝ শিশুটি।
চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার দিন সানেনের মা শিলা তার পাঁচমাস বয়সী আরেক সন্তান সামিনের ওষুধ কিনতে বেরিয়েছিলেন। ফেরার পথে সানেনের জন্য আইসক্রিম আনবে বলে কথা দিয়েছিলেন এই মা। এখন মায়ের খোঁজে ডিএনএ’র নমুনা হিসেবে এই শিশু সন্তানের রক্ত ও লালা সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাব।
চকবাজারের চুরিহাট্টায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পরিচয় না পাওয়া অজ্ঞাত ২১টি মরদেহের পরিচয় সনাক্তে ২০ জন দাবীদার স্বজনদের ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি’র ফরেনসিক ল্যাব।
ঢাকার জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, এখনো পর্যন্ত দাবীদার ১৬টি পরিবারের মা-বাবা-ভাই-সন্তান সহ নিকট স্বজনের রক্তের নমুনা নেয়া হয়েছে। অজ্ঞাতদের সনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত দাবীদার স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ করবে সিআইডি।
দুই বোন সূচি আর রিচি ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে বাবা ফায়সাল সারওয়ারের অপেক্ষা। চাঁদনি ঘাটে প্লাস্টিকের র-ম্যাটেরিয়ালের ব্যবসায়ীক অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে প্রিয় স্ত্রী-সন্তানের সাথে কথা বলেছিলেন। গতদিন দিনেও বাসায় ফেরেননি।
পুরান ঢাকায় রিক্সা চালাতেন নরুজ্জামান। ঘটনার দিন স্ত্রী ফোন করলে বলেছিলেন, রাস্তায় প্রচন্ডজানজট। তাই দেরি হবে বলে জানিয়েছিলেন, সেই শেষ কথা। মাত্র ৫ মাসের শিশু সন্তানের পিতা নরুজামানের স্ত্রী সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে জেলা প্রশাসনের তথ্য কেন্দ্রে স্বামীকে ফিরে পাবার আকুতি জানান।
হাজী মোহাম্মদ ইসমাইল তার অপেক্ষায় একমাত্র সন্তান ও স্বজনেরা। ঘটনার দিন থেকে এখনো তিনি নিখোঁজ। ভাই মোশাররফ হোসেন বড় ভাইকে ফিরে পেতে দ্বিতীয় দিনের মত খুব ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ঠায় অপেক্ষায়।
ঘটনার তিন দিনেও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোহানের পরিবারে স্বস্তি মেলেনি। রোহানের মায়ের শুন্য বুকে ফেরেনি খুব প্রিয় সন্তান রোহান। তাই চোখে জলে রোহানের পুরো পরিবারের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আজ একটি মাত্র ‘সুখবর’ ছিলো ভাই হারানো জুলহাসের কাছে। কারণ একমাত্র জুলহাসই আজ বড় ভাই সোলাইমানকে সনাক্ত করে প্রিয় স্বজনের শেষ যাত্রা সম্পন্ন করার সুযোগ পেয়েছে।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: