ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দুঃসময় যেনো দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মাঠের খেলায় যতই সেরাটা দিয়ে যাচ্ছেন, মাঠের বাইরের জীবনে ততই জড়িয়ে পড়ছেন বিতর্কে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা চলছে, এরমাঝেই সাবেক এক বান্ধবী আক্রমণাত্মক বক্তব্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। সেটির একদিন পরই জানা গেল, সিআর সেভেনের বিপক্ষে তদন্তের জন্য ডিএনএ চেয়ে পরোয়ানা জারি করেছে লাস ভেগাস পুলিশ।
ধর্ষণ মামলার বাদী মার্কিন ক্যাথেরিন মায়োর্গার করা মামলায় তদন্ত করছে মার্কিন পুলিশ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, মায়োর্গার ব্যবহৃত পোশাকে ডিএনএ খুঁজে পেয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। এবার তারা রোনালদোর ডিএনএ চায় মায়োর্গার কাছে পাওয়া উপাত্তের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে।
মার্কিন মডেল মায়োর্গার দাবি, ২০০৯ সালে লাস ভেগাসের একটি অ্যাপার্টমেন্টে তাকে নিয়ে যান রোনালদো। তিনি যখন পোশাক বদলাচ্ছিলেন, তখন হঠাৎ পিছন থেকে তাকে জাপটে ধরেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। পরে তাকে ধর্ষণ করেছিলেন।
শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রোনালদো। তার বিরুদ্ধে যখন মামলা করেছেন মায়োর্গা, তখন অবস্থা বেগতিক দেখে রোনালদোর আইনজীবী জানিয়েছিলেন যা ঘটেছিল তা ছিল কেবল পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে। সেই মামলার তদন্তেই নতুন মোড় নিল মার্কিন পুলিশের পরোয়ানা জারি।
গত সেপ্টেম্বরে নেভাদার আদালতে রোনালদোর বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। সেখানকার পুলিশ ডিএনএ পরোয়ানা ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষকে পাঠিয়েছে। পর্তুগিজ অধিনায়ক এখন জুভেন্টাসের হয়ে খেলছেন। তুরিনে আবাস গেড়েছেন। মেখান থেকে ইতালিয়ান পুলিশকে রোনালদোর ডিএনএ সংগ্রহ করে লাস ভেগাস পুলিশের কাছে পাঠাতে হবে।
রোনালদোর বিরুদ্ধে করা মামলার জল গড়াতে গড়াতে কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটা আপাতত সময়ের হাতেই তোলা থাকছে। এই বিতর্কের মাঝেই নতুন করে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন সাবেক বান্ধবী জ্যাসমাইন লিন্নার্ড। তিনি নজিরবিহীন কথা-আক্রমণে মহাতারকাকে মানসিক বিকারগ্রস্ত ও মিথ্যাবাদী বলেছেন।
এখানেই থেমে থাকেননি ইংলিশ মডেল লিন্নার্ড, ধর্ষণের অভিযোগ তোলা মায়োর্গাকে সাহায্য করার কথাও জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে রোনালদোর ‘আসল চেহারা’ খোলাসা করা হুমকি দিয়েছেন।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকার সময় শুরু। এরপর রিয়ালে যোগ দেয়ার পরও লিন্নার্ডের সঙ্গে ডেট করেছেন রোনালদো। লিন্নার্ডের দাবি, গত ১৮ মাসেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন জুভেন্টাস তারকা।
টুইটারে লিন্নার্ড লিখেছেন, ‘সে (রোনালদো) আসলে কেমন সেটা সম্পর্কে কারোই কোনো ধারণা নেই। মানুষ যদি তার আসল চেহারার অর্ধেকটাও জানে, তাহলে আতঙ্কিত হয়ে উঠবে।’
‘আমি আর দিনের পর দিন পেছনে বসে তার (রোনালদোর) মিথ্যা বলা শুনব-দেখব না। আমি তাকে (মায়োর্গা) সাহায্যর জন্য সবকিছু করতে যাচ্ছি। আমার কাছে এমন তথ্য এবং রেকর্ডিং আছে যা ক্যাথরিনকে এবং তার দলকে সত্যিকারের প্রকৃতি দেখানোর জন্য অমূল্য হিসেবে বিবেচিত হবে।’ ৩৩ বছরের লিন্নার্ড জানিয়েছেন, সাহায্য করার জন্য অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মায়োর্গার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
টুইটার বার্তায় রোনালদোকে নিয়ন্ত্রণহীন এবং খামখেয়ালি বলেও উল্লেখ করেন ইংলিশ মডেল, ‘আমার কাছে শতশত ম্যাসেজ আছে, পুরো যৌন বশীকরণের বাতাসে ভরপুর। যা মায়োর্গার অভিযোগের আয়না হিসেবে কাজ করবে। সে আসলে পুরোপুরি মিথ্যাবাদী এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত।’
‘আমরা কাছে প্রমাণ না থাকলে কেউই আমাকে বিশ্বাস করবে না। কিন্তু এজন্য কৃতজ্ঞ যে, আমি একটা স্মার্ট মেয়ে এবং আমার কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। সুতরাং খেলা শেষ।’ টুইটের শেষাংশে লেখেন লিন্নার্ড।