রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দুই মামলায় সোহেল রানা ও তার বাবা-মাসহ ৪২ জনকে আসামি করে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিআইডি। পলাতক ২৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ৩টার দিকে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জিআরও শাখায় সিআইডির এএসপি বিজয় কৃষ্ণকর এই চার্জশিট জমা দেন।
দুই মামলায় আসামী করা হয়েছে ভবন মালিক সোহেল রানা, তার বাবা আব্দুল খালেক, মা মর্জিনা বেগম, পোশাক কারখানা নিউ ওয়েভ বটম লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, এমডি মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথারটেক্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান, ফ্যানটম অ্যাপারেলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম, সাভার পৌরসভার সাবেক মেয়র রেফাতউল্লাহ, সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, ইঞ্জিনিয়ার রফিকুল ইসলাম, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার সরোয়ার কামালসহ ৪২ জনকে।
ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় অভিযুক্ত ১৮ জনের মধ্যে ইথারটেক্স লিমিটেডের সাবেক এমডি মাহবুব আলম ছাড়া বাকীরা হত্যা মামলায়ও অভিযুক্ত। তবে সরকারের অনুমোদন না পাওয়ায় বাদ দেয়া হয়েছে সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম।
এ মামলার সময় ১৩৫ জনকে সাক্ষী করা হলেও তাদের মধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে মাম হোসেন ও সহকারি প্রকৌশলী আলম মিয়ার নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে সিআইডি।
আর হত্যা মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে ৫৯৪ জনকে।
চার্জশিট দেওয়ার পর বিজয় কৃষ্ণকর বলেন, প্রায় দুই বছর লেগেছে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে। তবে আমার কাছে মনে হয় এটা খুব বেশী সময় না।
পোশাক মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সর্ম্পকে তিনি বলেন, ধসের একদিন আগেই মালিকরা জানতে পারে ভবনটি ধসে পড়বে। তারপরও পরের দিন শ্রমিকদের জোর করে কাজে বাধ্য।
এপিপি আনোয়ারুল কবীর বাবুল বলেন, কিছু আসামী পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দ্রুত বিচার হওয়ার জন্য এই মামলাটি দ্রুত বিচার আইনে অথবা বিশেষ আইনে বিচার করা যেতে পারে।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে রাজধানীর উপকন্ঠে সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ৮ তলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। ওই ঘটনায় নিহত হন ১ হাজার ১শ’ ৩৫ জন। জীবিত উদ্ধার করা হয় ২ হাজার ৪শ’ ৩৮ জনকে। যাদের মধ্যে অনেকেই চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
ওই ঘটনায় পরদিন সাভার থানায় হত্যা ও ইমারত নির্মাণ আইনে দুটি মামলা হয়। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডিকে। ঘটনার ২৫ মাসেরও কিছু বেশি সময় পর আদালতে দুই মামলার চার্জশিট জমা দিলো সিআইডি।