উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠনের অগ্রগতি জানাতে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আইন সচিব, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সচিব, শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল, বার কাউন্সিলরের চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক, আইজিপি, ডিজি বাংলাদেশ টেলিভিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার, বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ’র সভাপতি সম্পাদক সহ সংশ্লিষ্ট ১৮ বিবাদীকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল মানবাধিকার সংগঠন জেন্ডার প্লাটফর্ম, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিসহ সংশ্লিষ্ট ছয়টি সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন বিষয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করে। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আজ রুল জারি করলেন।
এর আগে ২০০৯ সালের ১৫ মে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞাসহ যৌন হয়রানি রোধে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দিয়ে একটি রায় দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের ওই রায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ কেন্দ্র গঠন এবং অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ না করার কথা বলা হয়। সে রায়ে আরো বলা হয়,‘দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে অভিযোগ কেন্দ্র থাকবে। এই অভিযোগ কেন্দ্র পরিচালনার জন্য ন্যূনতম পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি থাকবে আর কমিটির প্রধান হবেন একজন নারী। এ ছাড়া কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ নারী সদস্য থাকবেন। কমিটি যৌন হয়রানির কোনো অভিযোগ পেলে তদন্ত ও অনুসন্ধান শেষে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠাবেন।
এরপর দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধের ধরণ ও মাত্রা বুঝে বিচার বিভাগ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। ওই রায়ে আরো উল্লেখ করা হয়, কমিটি নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং পুলিশের কাছে অপরাধীকে না পাঠানো পর্যন্ত নির্যাতিত ও অভিযুক্ত ব্যক্তির কোনো পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না। রায়ে আরো বলা হয়, যতদিন পর্যন্ত জাতীয় সংসদে যৌন হয়রানি রোধে কোনো আইন প্রণয়ন করা না হয়, ততদিন বাংলাদেশ সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের দেয়া এ নির্দেশনা বাধ্যতামূলকভাবে কার্যকর হবে।’