নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিখোঁজ সহকারী অধ্যাপক মোবাশ্বের হাসান সিজার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত ৭ নভেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ বা বলপূর্বক আত্মগোপনে থাকতে পারেন বলে এক বিবৃতি জানানো হয়।
সোমবার এক বিবৃতির মাধ্যমে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই উদ্বেগের কথা জানানো হয়।
মোবাশ্বের হাসান ছিলেন বাংলাদেশের ধর্মীয় বিষয়ের একজন বিখ্যাত গবেষক। তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থাও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক গবেষণার কাজ করে আসছিলেন।
মোবাশ্বের হাসানের এক বন্ধু বলেন, একাডেমিক গবেষণার কাজের জন্য হয়তো তাকে গোপনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর অফিসের অধীনে ইউএনডিপির ঢাকার এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে মোবাশ্বের হাসানকে আর পাওয়া যায়নি। মোবাশ্বের হাসান ৬ টা ৩০ মিনিটে অনুষ্ঠান শেষে করে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। তার কিছুক্ষণ পরে সাংবাদিকরা তাকে পেলেও এখন ফোন বন্ধ রয়েছে বলে এক বিবৃতি জানায় অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
তার পরিবার সেদিন রাত ১০ টায় মোবাশ্বের হাসান নিখোঁজ উল্লেখ করে খিলগাও থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। পড়ে পরিবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান -৩ কে জানায় বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গত তিন বছরে প্রায় শতজন বিরোধী দরের নেতা কর্মীকে অবৈধভাবে গোপনে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিছু দিন ধরে এর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ধরনের নিখোঁজ হওয়া জনমানুষকে ভীত করে তুলছে বলে জানায় এই সংস্থা। জোরপূর্বক আত্মগোপন বা এই ধরনের নিখোঁজ হওয়ার পর ওই ব্যক্তির উপর চালানো নির্যাতন, এবং অন্যান্য ভুল চিকিৎসার ঝুকি থাকে সবচেয়ে বেশি।
মোবাশ্বের হাসান কোথায় আছে, কি হতে যাচ্ছে তা তার পরিবারকে জানানোর জন্য বাংলাদেশ অথরিটির কাছে আহ্বান জানান অ্যামনেস্টি। জরুরি ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও স্বাধীন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তার এবং তারমত আরো অন্য সকল নিখোঁজদের বের করে অপরাধীদের শাস্তির মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয়। স্বাধীন ভাবে কাজ করাও মানবাধিকারের নিরাপত্তা, সাংবাদিক, একাডেমিক ও বিরোধী মতালম্বীদের মতামত প্রকাশও সংগঠনের স্বাধীনতা দিতে আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
অধ্যাপক মোবাশ্বের হাসান সিজারকে খুঁজে বের করার দাবিতে আরও একটি অনলাইন পিটিশন শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়। যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির সিকিউরিটি স্টাডিজ প্রোগ্রাম-এর সহযোগী অধ্যাপক সি. ক্রিস্টিন ফেয়ার এবং ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির পলিটিকস অ্যান্ড গভর্নমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক আলী রিয়াজ মিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর আবেদন জানিয়ে পিটিশনটি চালু করেছেন।