কট্টর বৌদ্ধদের সমর্থনে সোমবার চারটি নতুন আইনে সই করেছেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন। তবে এই আইন দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিমদের জন্য বৈষম্যমূলক বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
গত ২১ আগস্ট সংসদে পাস হওয়ার এই আইনে সই করলেন প্রেসিডেন্ট। এরআগে প্রেসিডেন্ট অফিসের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, আইন সংক্ষিপ্তভাবে স্বাক্ষরিত হওয়ার আগে পর্যালোচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠানো হবে।
এই আইনের মাধ্যমে যাদের একাধিক স্ত্রী আছে তাদের জন্য শাস্তি নির্ধারণ করা হবে। তবে মুসলিমদের লক্ষ্য করে এই আইন করা হয়নি বলে দাবি করেছে সরকার।
মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশের বেশি মুসলিম। এদের মধ্যে বহুবিবাহের প্রথা চালু আছে। এছাড়া আরো দুটি বিলেও সই করেন থেইন সেইন। এর মধ্যে আছে জাতীয়তা ও ধর্মরক্ষা আইন এবং সরকার নির্ধারিত সন্তান জন্ম দেওয়া।
মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ বলছে, এই আইন খুবই বিপজ্জনক। সংস্থার এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ফিল রবার্টসন বলেন, ‘তারা (মিয়ানমার সরকার) ধর্মীয় ভিত্তিতে বৈষম্য এবং গুরুতর সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টির সম্ভাবনা কথা জাহির না করলেও এর সম্ভাবনা আছে। এই আইন এখন কাগজে আছে, তবে উদ্বেগের বিষয় তারা এটা কিভাবে বাস্তবায়ত এবং প্রয়োগ করে।
গতে মে’তে ‘মা মা থা’(জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন) আইনে সই করেন প্রেসিডেন্ট। এতে কিছু গোত্রের নারীরা তিন বছর ব্যবধানের আগে সন্তান জন্ম দিতে পারবেন না। এর মধ্যে মুসলিমরা ছিলেন।
দেশটির মুসলিমদের অভিযোগ বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ সন্ন্যাসী নেতৃত্বাধীন একটি গ্রুপ মায়ানমারের পুরো কর্তৃত্ব নিতে চাইছে, যা মুসলিমদের অনুভূতিতে আঘাত দিচ্ছে।
ধর্মীয় দাঙ্গায় মিয়ানমারে শতশত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ২০১২ সালে রাখাইন রাজ্যে এমন এক দাঙ্গা কয়েকশ’ মানুষ নিহত হওয়ার পাশাপাশি ১ লাখ ৪০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়, যাদের অধিকাংশই মুসলিম রোহিঙ্গা।