ব্রাজিলকে হারিয়ে দীর্ঘ ২৮ বছর পর কোপার শিরোপা জেতায় বাধভাঙা উচ্ছ্বাস ছিল আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মাঝে। আর তাই পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিরোপা জয়ের আনন্দ মিছিল হয়েছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
তবে পুলিশের ভয়ে কোনো মিছিলই শহরের প্রধান সড়কে যায়নি। খেলায় হারের পর ব্রাজিল সমর্থকদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিরোপা জেতার আনন্দে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলের বৌবাজার মোড় থেকে ২০-২৫ জন আর্জেন্টাইন সমর্থক আনন্দ মিছিল বের করে।
এ সময় মিছিলকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে উল্লাসে মাতেন। তবে মিছিল শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ চলে আসায় মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এছাড়া শহরের পূর্বপাইকপাড়া ও কাজীপাড়ায়ও আনন্দ মিছিল করেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা।
এরআগে গতকাল শনিবার দুই দলের সমর্থকদের উন্মাদনা দমাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে হাজারো পুলিশ। একই সঙ্গে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বড় পর্দায় খেলা দেখাসহ সব ধরনের বিজয় মিছিল।
এসব বিষয়ে সতর্ক করে শনিবার সকাল থেকে জেলা শহরসহ পুরো জেলায় মাইকিং করছে পুলিশ।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, আগামী রবিবার ভোর ৬টায় কোপা আমেরিকার ফাইনাল খেলা হবে। এই খেলাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একাধিক স্থানে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাই জেলা পুলিশ থেকে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, খোলা জায়গায় বড় পর্দায়, কোনও ক্লাবে বা চায়ের দোকানে কোথাও খেলা দেখার আয়োজন করতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে আজ আমরা মাইকিং করা শুরু করেছি।
এক প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ফাইনাল খেলার দিন ভোর ৫টা থেকে মাঠে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। এছাড়া জেলার ১১৬টি বিটে চারজন মিলে দল করে এক হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য মাঠে কাজ করবে। পাশাপাশি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা আগাম বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। খেলা শেষ হওয়ার পর কোনও অবস্থাতেই মিছিল করা যাবে না। কেউ যদি পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে তাহলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ নিয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
গত ৬ জুলাই বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের দামচাইল বাজারে খেলা কে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়।
প্রায় ৩৩ লাখ লোকের এই জেলায় নয় উপজেলাসহ ১০০টি ইউনিয়নে ১৩৩১টি গ্রামে বিরাজ করছে ফুটবল উন্মাদনা। এদের অধিকাংশই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সমর্থক।