বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট একটি সাধারণ নির্বাচনের দাবিতে অনড় থাকলেও আগামী অর্থবছরের বাজেটে এই খাতে কোনোই বরাদ্দ চায়নি নির্বাচন কমিশন। বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে মাত্র ৮৮৭ কোটি টাকা। নির্বাচন কমিশনই বলছে, সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সম্ভাবনা না দেখেই শুধু পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্য এই স্বল্প বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
গত বছর ৫ মের নির্বাচনের পর থেকেই বিরোধী বিএনপি জোট যত দ্রুত সম্ভব একটি সাধারণ নির্বাচন দাবি করে আসছে। এজন্য গত জানুয়ারি থেকে তিন মাস টানা অবরোধ হরতালও ডাকে তারা। পেট্রোল বোমায় নিহত ও আহত হয় বহু মানুষ। কিন্তু সরকার তাদের ওই দাবি সবসময়ই প্রত্যাখান করে এসেছে। নির্বাচন কমিশনের চাওয়া আগামী অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দে সরকারের মতেরই প্রতিফলন ঘটেছে। কোনো বরাদ্দই চাওয়া হয়নি সাধারণ নির্বাচনের জন্য।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের নির্বাচনী ক্যালেন্ডার থাকে। প্রতিটি নির্বাচনই হয় আইনী কাঠামোর মাধ্যমে। একটি নির্বাচন সম্পন্ন হলে পরবর্তী নির্বাচন কবে হবে সেটা সেই আইনী কাঠামোতেই বলা আছে। কাঠামো দেখেই আমাদের বাজেটে কী প্রয়োজন সেটা ঠিক করি।
তবে বাজেটে নির্বাচন কমিশনের প্রশাসনিক ব্যয় ও ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমসহ পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন খরচ বাবদ ৮শ ৮৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭০০ কোটি টাকার নির্বাচনী বাজেট ধরা হয়েছে পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন উপনির্বাচনের জন্য। জানুয়ারির মধ্যভাগে সারাদেশের ৩১৭ টি পৌরসভার মধ্যে ২৮০ টি পৌরসভা নির্বাচন করবে ইসি। ২৮০টি পৌরসভা নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী ব্যয় ধরা হচ্ছে ১০০ কোটি টাকা। ২০১৬ এর মে এবং জুনে সারাদেশের সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ৫৭৫ কোটি টাকা। কোনো বাজেট চাওয়া হয়নি সাধারন নির্বাচনের জন্য।
সচিব মো: সিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, ২৮০টি পৌরসভা নির্বাচন এবং সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। তাছাড়া এই সময়ে আরো উপনির্বাচন হতে পারে। সবগুলো নির্বাচন করার জন্য আমাদের অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক হিসাব মতে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা প্রয়োজন হবে এসব নির্বাচন ব্যবস্থাপনা করার জন্য।
গত পাঁচ বছরের তুলনায় এবার পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নির্বাচনী ব্যয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। যেমন ২০১১ সালে সারাদেশের পৌর নির্বাচনে ব্যয় হয়েছিল ৪২ কোটি টাকা এবং ইউপি নির্বাচনে ব্যয় ছিল দুইশ’ ৪২ কোটি টাকা।
আগামী নির্বাচনের অরাজকতা ঠেকাতে আবারো ইভিএম ফিরিয়ে আনারও পরিকল্পনা করছে ইসি। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের উপলব্ধি থেকে আগামীতে ইভিএম ব্যবস্থা ফেরাতে কোন আপত্তি তুলবেনা বলে আশা করছে ইসি।
আগামী ১৫ জুন সারাদেশের ৪৭৮ টি উপজেলায় সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।