সব রকম প্রস্তুতির পরও করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে (১ এপ্রিল) শুরু হতে পারেনি। এমনকি পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া গত ৫ মাসেও সেই পরীক্ষা নিতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্থগিত হয়ে যাওয়া ওই পরীক্ষা ঠিক কবে শুরু করা যাবে; তাও নিশ্চিত করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। আর এই সুযোগ নিচ্ছে একদল সাইবার দুর্বৃত্ত। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে বারবার বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়াচ্ছে।
এরআগেও কয়েকবার পরীক্ষা শুরুর তারিখ নিয়ে গুজব রটানো হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর তারিখ নিয়ে গুজব রটায় ওই সাইবার দুর্বৃত্তরা। যার কারণে নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। যদিও তার কয়েকদিন পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে কোনো ধরনের গুজবে কান না দিতে শিক্ষক, অভিভাবক ও পরীক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানায়।
কিন্তু আমাদের প্রশ্ন বারবার সর্তক করার পরও কেন বিভ্রান্তি আর গুজব থামানো যাচ্ছে না? এমনিতেই সময় মতো পরীক্ষা না হওয়ায় মানসিকভাবে নাজুক অবস্থা আছে শিক্ষার্থীরা। তার উপর এমন গুজব আর বিভ্রান্তিতে আরও নাজক হয়ে পড়েছে তারা। এই অবস্থায় তাদের পক্ষে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়া কতটা সম্ভব?
আমরা এরই মধ্যে জেনেছি করোনাভাইরাসের কারণে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী সমাপনী পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। একইভাবে বাতিল হয়েছে অষ্টম শ্রেণির জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা। কিন্তু এইচএসসির মতো বড় পরীক্ষার ক্ষেত্রে সেই সুযোগ নেই। যখনই হোক পরীক্ষা নিতেই হবে, তার কোনো বিকল্পও নেই। সরকারের নীতিনির্ধারকরাও সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আমরা দেখছি, এখন পরীক্ষা নেওয়ার চেয়ে গুজব আর বিভ্রান্তি ঠেকানোই কর্তৃপক্ষের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে গুজব আর বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া গেলে কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেত। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে আমরা দেখিনি। আর ঠিক এই কারণেই সেই চক্রটিকে ঠেকানো যাচ্ছে না।
আবার গুজবের পেছনে ছুটে চলার দায় কিছুটা হলেও কোনো কোনো অভিভাবকের আছে। কেননা কর্তৃপক্ষ বারবার ঘোষণা দেওয়ার পরও গুজবের অন্যতম উৎস সামাজিক মাধ্যমের ভুয়া কিছু পেজ এবং গ্রুপে দেয়া পোস্টকে কেউ কেউ বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলছেন। আর এ কারণে গুজবের ডাল-পালা আরও ছড়িয়েছে। তাই অভিভাবকদেরও সচেতন থাকতে হবে।
আমরা মনে করি, যতদিন না শিক্ষা মন্ত্রণালয় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা না করছে, ততদিন যে কোনো গুজব সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।