রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের তৃতীয় দিনে ২১২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমেছিল বাংলাদেশ। শুরুতে তামিম-সাইফকে হারিয়েও ভালোভাবেই এগোচ্ছিল। শেষ বিকেলে নাসিম শাহর হ্যাটট্রিকে সব এলোমেলো হয়ে হারের শঙ্কায় দিনশেষ করেছে মুমিনুলের দল।
চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ শুরু করবে ৬ উইকেটে ১২৬ রান নিয়ে। স্বাগতিকদের আবারও ব্যাটিংয়ে নামাতেই এখনও ৮৬ রান দরকার সফরকারীদের।
অভিষিক্ত সাইফ হাসান ১৬ রানের বেশি এগোতে পারেননি, প্রথম ইনিংসে পেয়েছিলেন শূন্য। ওই ইনিংসে ৩ রান করা তামিম ইকবাল এদিন দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে ফিরেছেন ৩৪ রানে। তাকে এলবিডব্লিউ করেন ইয়াসির। সাইফকে বোল্ড করেন নাসিম।
বাংলাদেশ-২৩৩ ও ১২৬/৬, পাকিস্তান-৪৪৫ (তৃতীয় দিন শেষে)
অধিনায়ক মুমিনুল হক ও নাজমুল হোসেন শান্ত মিলে পরে ৭১ রানের জুটি গড়ে দিনটা নিরাপদে পার করার মঞ্চ গড়েছিলেন। সেটায় হানা দেন নাসিম শাহ। ১৬ বছর বয়সী পেসার ইনিংসের ৪১তম ওভারের তুলে নেন হ্যাটট্রিক।
শান্তকে দিয়ে শুরু। ৩৮ রান করা এ বাঁহাতিকে ওই ওভারের চতুর্থ বলে রিভিউ নিয়ে এলবি করেন নাসিম। পরের বলে ইয়র্কারে এলবি করেন নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলামকে। হ্যাটট্রিক আসে অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যর্থতায়। ষষ্ঠ, তথা শেষ বলে অফস্টাম্পের অনেকটা বাইরে করা বলটি খোঁচা দিয়ে স্লিপে হারিসের তালুতে জমা পড়েন তিনি।
পরে মোহাম্মদ মিঠুনের উইকেটও হারিয়েছে বাংলাদেশ। রানের খাতা খুলতে পারেননি প্রথম ইনিংসের একমাত্র ফিফটিয়ান। লিটন শূন্য আর অধিনায়ক মুমিনুল ৩৭ রানে চতুর্থ দিনের লড়াই শুরু করবেন।
আগে মধ্যাহ্ন বিরতির পরের ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানকে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। দিনের শুরুতেই আগের দিনের দুই অপরাজিত, সেঞ্চুরিয়ান বাবর আজম ও ফিফটি করা আসাদ শফিককে ফেরায় টাইগাররা। পরে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ইয়াসির শাহকে আউট করে লাঞ্চের আগেই। হারিস সোহেল ৭৫ রানের ইনিংস খেলে লিড দুইশর ওপারে নেন।
দ্বিতীয় দিনের মতো এদিনও প্রথম সাফল্য এনেছেন আবু জায়েদ রাহি। ফেরান ১৪৩ করা বাবরকে। রাহির লেটসুইং করা বল পাকিস্তান তারকার ব্যাটে চুমু দিয়ে জমা হয় প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো মিঠুনের তালুতে। থামে ১৯৩ বলে ১৮ চার ও এক ছক্কার ইনিংস। ভাঙে আসাদের সঙ্গে ১৩৭ রানের জুটি। ২ রানে বাবরকে জীবন দিয়েছিল বাংলাদেশ।
বাবরের পর আরেক অপরাজিত আসাদকেও থিতু হতে দেয়নি সফরকারীরা। এবার সাফল্যের মুখ দেখেন ইবাদত। তার ভেতরে ঢুকতে থাকা বল আসাদের ব্যাটের ভেতরের কানা ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসবন্দী হয়। ৯ চারে ৬৫ রানের ইনিংস এ মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানের।
শনিবার সমালোচিত, দীর্ঘদিন পর টেস্টে ফেরা রুবেল হোসেন রোববার বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই উল্লাসে মেতেছেন। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান রিজওয়ানকে ১০ রানে থামিয়ে। অফস্টাম্পের বাইরে পিচ করা বলে পুলশট খেলতে যেয়ে ফাইন লেগে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ হয়ে ফেরেন রিজওয়ান।
খানিক পরেই রুবেলের দ্বিতীয় আঘাত। ৫ রান করা ইয়াসির শাহকে এলবিডব্লিউ করেন এ পেসার। রিভিউ নিয়ে পান সাফল্য। ৭২ বলে ফিফটি তোলা হারিস সোহেল ৫৪ রানে অপরাজিত থেকে বিরতিতে যান।
বিরতির পর নেমে হারিসকে একপাশে রেখে শাহিন আফ্রিদিকে তুলে নেন রুবেল। পরে হারিসকে ৭৫ রানে তামিমের ক্যাচে ফিরিয়ে শেষের কাছে আনেন তাইজুল। নাসিম শাহকে রানআউট করে সেই শেষটা টানেন সাইফ।
রুবেল ও রাহি ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন। ২টি উইকেট তাইজুলের। একটি গেছে ইবাদতের ঝুলিতে।