‘বাংলা চলচ্চিত্র তার কাছ থেকে আরও অনেক কিছু পেতে পারতো। মৃত্যু সে সুযোগ নষ্ট করে দিয়েছে এক নিমিষে। তার অনুপস্থিতি বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য বিরাট ক্ষতি।’ তারেক মাসুদের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে চ্যানেল আই অনলাইনকে দেওয়া সাক্ষাতকারে কথাগুলো বলেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ ড. ফাহমিদুল হক।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের জোকায় ভয়াবহ এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা তারেক মাসুদ ও চিত্রগ্রাহক সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ ৫ জন।
ড. ফাহমিদ বলেন, তারেক মাসুদ এ অঞ্চলের জাতিসত্তা নিয়ে কাজ করেছেন। মুক্তির গান, মুক্তির কথা, মাটির ময়নার মতো জাতিতাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। তার প্রতিটি চলচ্চিত্রে মুক্তিযুদ্ধের পাশাপাশি ফুটে উঠেছে বাঙালির জাতি সমসাময়িক বিষয়।
তারেক মাসুদের বাণিজ্যিক ধারার চলচ্চিত্রের পাশাপাশি চলচ্চিত্রকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন ঢাবির এই শিক্ষক। তিনি বলেন, তারেক মাসুদ রানওয়ে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ, গার্মেন্টস সেক্টরে সমস্যার পাশাপাশি বৈদেশিক রেমিটেন্সের মতো বিষয় তুলে নিয়ে এসেছেন তার চলচ্চিত্রের কাহিনী চিত্রে।
‘তিনি এতোটাই উদ্ভাবনী মেধার অধিকারী ছিলেন যে চলচ্চিত্রকে সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে গ্রামে গ্রামে ঘুরে চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী করেছেন।’
বাংলা চলচ্চিত্রকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্বের দাবিদারও তিনি। তরুণ প্রজন্মের জন্য তারেক মাসুদের কাজ পাথেয় হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণদের জন্য তারেক মাসুদ অগ্রজ হয়ে থাকবেন সবসময়। সকল নির্মাতারই একটা নিজস্বতা থাকে, তবে তার কাজ থেকে তরুণদের অনেক কিছু শেখার আছে।
তারেক মাসুদ তার কাজ শেষ করে যেতে পারেননি উল্লেখ করে ড. ফাহমিদুল হক বলেন, ‘একজন নির্মাতা হিসেবে তিনি তার কাজের মধ্য পর্যায়ে ছিলেন। কাগজের ফুল চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। স্বাভাবিক মৃত্যু হলে বাংলা চলচ্চিত্র আরও অনেক ভালো কিছু পেতো।’