টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে হত্যার শিকার রুপা শিক্ষক হতে চেয়েছিলো বলে জানিয়েছেন তার মামা ফরিদুল ইসলাম। নির্মমতার শিকার রুপা কর্মস্থল শেরপুর থেকে বগুড়া গিয়েছিলেন শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিতে।
নিহত রুপা ছোট বেলা থেকেই মেধাবী ছিলো, শিক্ষকতা পেশাই ছিলো তার ধ্যানজ্ঞান জানান তার মামা।
দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ দ্রুত লাশ ফেরত চান নিহতের ভাই।
স্থানীয় আইনজীবি ও মানবাধিকার কর্মী এস আকবর বলেন, পূর্বেও টাঙ্গাইলে এমন ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত হলে আজ রুপা এমন নির্মমতার শিকার হত না।
গতকাল মঙ্গলবার মধুপুর থানা পুলিশ ছোঁয়া পরিবহনের চালক, সুপারভাইজার ও ৩ হেলফারকে আটক। পরে গতকাল তাদের বিচারিক আদালতে তোলা হয়ে ১৬৪ ধারায় হত্যা সংশ্লিষ্ট বর্ননাসহ হত্যায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়।
এঘটনায় দুপুর আড়াইটার টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার মো. মাহাবুব আলম তার কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিং করে হত্যার বর্ণনাসহ আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির লক্ষ্যে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার কথা জানান।
আজ দুপুর তিনটার দিকে গাড়ীর চালক ও সুপার ভাইজারকে বিচারিক আদালতে নেয়া হলে আদালতে তারা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনার এক পত্যক্ষদর্শীর জবানবন্দীও গ্রহণ করা হয়।
অরণ খোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক কাইয়ুম জানান, আমরা আরো দুই আসামীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করি। আসামীরা আদালতে স্বীকারোন্তি মূলক জবানবন্দী দিয়েছে। নিহতের ভাই হাফিজুল টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অতুল মন্ডলের নিকট লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করেছে।
ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাতে বগুড়া থেকে ফিরছিলেন মময়নসিংহ ছোঁয়া পরিবহনের একটি বাসে। বাসটি টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা অতিক্রম করলে নেমে যায় সকল যাত্রী। আর এই সুযোগ নিয়ে বাসটি কালিহাতী এলাকায় পৌঁছালে গাড়ীর হেলপার ও অন্যরা তাকে গাড়ির পিছনের সিটে নিয়ে জোড় করে মধুপুর পর্যন্ত পালাক্রমে ধর্ষণ করে। মধুপুর পৌঁছালে নিহত রুপা আলো দেখতে পেয়ে চিৎকার চেচামেচি করলে তার ঘাড় মটকে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনীরা। পরে মধুপুর ময়মনসিংহ সড়কের মধুপুর বনের পচিশ মাইল এলাকায় জঙ্গলের মধ্যে তার লাশ ফেলে রেখে যায় হত্যাকারীরা।
পরের দিন সকালে স্থানীয়রা মরদেহটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হত্যা মামলা দায়ের ও লাশের পোস্টমর্টেম করে এবং কোন দাবিদার না থাকায় বেওয়ারীশ হিসাবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।