‘পাহাড়ি সংস্কৃতি: বৈচিত্র্য উদযাপন ও আত্মপরিচয় জোরদার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পালিত হয়েছে আর্ন্তজাতিক পর্বত দিবস। পর্বত দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকার বেইলি রোডে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজন করেছে পাঁচদিনব্যাপী পার্বত্য মেলার।
বিকেল থেকে মেলায় উৎসুক ক্রেতা দর্শনার্থীর ভিড় লক্ষ্য করা যায়। পার্বত্য অঞ্চলের বাজার থেকে সংগ্রহ করা নানা পণ্য সাজিয়ে স্টলে বসেছেন পার্বত্য অঞ্চল থেকে আসা উদ্যেক্তারা।
বিক্রেতারা চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, মেলাতে লোক সমাগম ও বেচাবিক্রি ভালো। তবে গত বছরের মতো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর লোক সমাগম আরো বেশি হয়েছিলো।
বিক্রেতারা পাহাড়ি বাজার থেকে জুম চাষের এইসব বাহারি ফল, ফসল ও পণ্য সংগ্রহ করে এনেছেন। মেলায় বিভিন্ন স্টলে রয়েছে বারোমাসি কাঁঠাল, গেরা সুন্দরি কলা, সূর্যমুখি কলা, আনারস, কমলা, জাম্বুরা, পাহাড়ি আলু, তেঁতুল, আমলকি সহ নানারকম ফল। রয়েছে বিভিন্ন ফসল। যব, ভুট্টা, বিভিন্ন জাতের বিন্নিধান। রয়েছে বিলাতি শীম, তিত বেগুন, কলার তোড়, পাহাড়ি শীমের বিচিসহ নানা রকম বাহারি সবজি।
বিক্রেতারা বলছেন, এইসব ফল, ফসল ও সবজি অরগানিক। কোন রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার করা হয় নি।
পার্বত্য অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী পিঠাও পাওয়া যাচ্ছে বেশ কয়েকটি স্টলে। কেংদ মুঙ, ছেস্মা মুঙ, রফ্রি মুঙ, গুঙ মুঙ নানান সব পিঠাপুলি।
পিঠাগুলো নামে যেমন বৈচিত্র্যপূণ্য স্বাদেও অতুলনীয় জানালেন পিঠা ক্রেতা লুনা দেওয়ান। তিনি এই মেলায় এসেছেন পিঠা-পুলির স্বাদ নিতেই।
শুধু পাহাড়ি ফল, ফসল আর পিঠেপুলিই নয়। আছে তাঁতবুনা কাপড়, বাঁশ ও কাঠের পণ্যও। ঘুরতে আসা ক্রেতারাও খুশি। কিনছেন নিজেদের পছন্দের পণ্য সামগ্রী।
ক্রেতা রাসেল কিনলেন একটা গায়ের চাদর। তিনি জানান, ‘মাত্র দুইশ সত্তর টাকায় এমন শাল রাজধানীর বিপনীবিতান গুলোতে মিলবে না’। তাই মেলা থেকেই ওমের শীত চাদর তিনি কিনে নিয়েছেন। এটাতে যেমন আছে ওম, আছে পাহাড়ি মানুষের শ্রম ও মায়ার স্পর্শ। ক্রেতা হিসেবে ভিড় করছেন দেশে বাস করা অনেক বিদেশী নাগরিক।
পাহাড়ি জুম চাষের ফল-ফসল ও পাহাড়িদের বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবন যাপনের বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী নিয়ে এই পার্বত্য মেলা রাজধানীর ইট কাঠ পাথরের শহরের মানুষদের কিছুটা পাহাড়ি জীবনের ঘ্রাণ দিতে পারবে- এমনটাই বিশ্বাস আয়োজকদের।
মেলা চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর অবধি। সময় সুযোগ মিলিয়ে ঘুরে আসতে পারেন ঢাকার বেইলি রোডের পার্বত্য চট্টগ্রাম কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই পার্বত্য মেলা থেকে।