বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার নথি বিচারিক আদালত থেকে ৫১ দিন পর হাইকোর্টে এসে পৌঁছেছে।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল এই মামলায় সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। এই মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সম্পত্তি জব্দের আদেশ স্থগিত করে দুই মাসের মধ্যে মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠাতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেয়া হয়। সে আদেশ অনুযায়ী মামলার নথি দুই মাসের আগেই হাইকোর্টে এসে পৌঁছাল।
গত ১৮ নভেম্বর এ মামলায় ৭ বছরের সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিলটি করেন বেগম খালেদা জিয়া। বিচারিক আদালতের দেওয়া ৬৩৮ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠার এ আপিলে সাজার রায় বাতিল এবং মামলা থেকে খালাস ও খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন করা হয়।
গত ২৯ অক্টোবর ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মামলার বাকি সব আসামিকে একই সাজা দেয়া হয়। এবং ট্রাস্টের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘোষণা করেন আদালত। আর মামলার অন্যতম আসামি হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেয়া হয়।
ওই রায়ে বলা হয়, সার্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণে যা মনে হয়, প্রত্যেক আসামিই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এতে তারা সর্বোচ্চ শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। এ কারণে খালেদা জিয়াসহ চার আসামিকেই সংশ্লিষ্ট আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির আদেশ দেয়া হয়েছে।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা লেনদেনের অভিযোগে বেগম খালেদা জিয়াসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। অন্য আসামিরা হলেন, বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর সাবেক এপিএস জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এপিএস মনিরুল ইসলাম খান।
ওই মামলায় ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয় ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ। মামলার বিচার চলাকালীন তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের প্রতি বেগম খালেদা জিয়া অনাস্থা দিলে বিচারের জন্য পাঠানো হয় ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতে। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ওই আদালতে মামলাটি আড়াই বছর ধরে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে ছিল।
শেষ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া যুক্তি তর্কে অংশ না নেয়ায় তার অনুপস্থিতিতেই বিচার চলার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এরপর রায় দেন আদালত।