একজন মাঠে বসে খেলা দেখেছেন। আরেকজন ব্যস্ততার জন্য মাঠে আসতে পারেননি। মাঠে থাকুন আর না থাকুন দলের জন্য প্রাণ কাঁদে দুজনেরই। তারা ক্রোয়েশিয়া প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা গ্র্যাবার-কিটারোভিচ ও রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন।
শনিবার কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের শেষমুহূর্ত পর্যন্ত উত্তেজনা জিইয়ে রেখে ২০ বছর পর বিশ্বকাপের সেমিতে পৌঁছেছে ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে পেনাল্টি শটে রুশদের হারায় ক্রোয়েটরা। এমন উত্তেজনা আর ইতিহাসের ম্যাচে হাজার হাজার সমর্থকের সঙ্গে মাঠে সাক্ষী ছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্টও।
মাঠে বসে দলের খেলোয়াড়দের শুধু শক্তিই যোগননি, ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে খেলোয়াড়দের সঙ্গে নেচেছেন কোলিন্ডা।
ক্রোয়েশিয়া প্রেসিডেন্ট যখন খেলোয়াড়দের সঙ্গে নেচে-গেয়ে আনন্দ করেছেন, তখন দুর্দান্ত লড়াইয়ের জন্য নিজ দলের খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়েছেন পুতিন। দলের তারকা স্ট্রাইকার ডেনিস চেরিশভকে আলাদা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
প্রথম ম্যাচের পর ব্যস্ততার কারণে আর মাঠে উপস্থিত থাকতে পারেননি পুতিন। তবে তার জায়গায় গ্যালারিতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেদেভ।
ম্যাচ শেষে চেরিশভ বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী ড্রেসিংরুমে ছিলেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনও আমাকে ফোন করেছিলেন। দারুণ ম্যাচের জন্য তিনি আমাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাকে বলেছি আমরা হতাশ, তবে আমাদের সামনে তাকাতে হবে।’
অন্যদিকে, দল নকআউটপর্বে ওঠার পর খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে খেলা দেখার সিদ্ধান্ত নেন ক্রোয়েশিয়া প্রেসিডেন্ট। ডেনমার্কের বিরুদ্ধে শেষ ষোলোর ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগেই ব্যক্তিগত বিমানে নিজের বহর নিয়ে রাশিয়ায় পৌঁছান কোলিন্ডা। বিমানে তার পরনে ছিল জাতীয় দলের জার্সি। বিমানে অন্যদের সঙ্গে মজা করতে করতেই রাশিয়ায় পৌঁছান। পরে মাঠেও ক্রোয়েশিয়া জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দিয়ে খেলা দেখেন।
আগের ম্যাচের মতো কোয়ার্টার ফাইনালেও জাতীয় দলের জার্সি গায়ে গ্যালারিতে বসে মাঠে মদ্রিচ-রাকিটিচদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উৎসাহ দিয়ে যান কোলিন্ডা। এসময় অন্যদের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তোলেন তিনি। ম্যাচ শেষে সেমিফাইনালে ওঠায় ড্রেসিংরুমে গিয়ে কোচ ও পুরো দলকে অভিনন্দন জানান এবং সবার সঙ্গে আনন্দের নাচ নাচেন প্রেসিডেন্ট। তার নাচের ছোট ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল।
২০ বছর আগে ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ডেভিড সুকরের ক্রোয়েশিয়া বিশ্বের তৃতীয় সেরা দলের খেতাব জিতেছিল। প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ক্রোয়েটদের সেই উত্থান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটাতে ফুটবলের জোয়ার এনে দিয়েছিল। যার ফসল মদ্রিচ, রাকিটিচ, মানজুকিচরা। তাদের আরও এগিয়ে নিতে উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট।