বাঁশ, বেত, কাঠ, কাগজ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে ঈদল, ময়ূর, চূড়াসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তৈরী করা হয়েছে জাহাজ। সেটিকে ধর্মীয় ভাসায় বলা হয়ে কল্প জাহাজ। নানা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে নাচে, গানে যেন উচ্ছ্বাস। আর এ উচ্ছ্বাসের মধ্যে বাকঁখালী নদীতে ভাসানো হয় জাহাজ সমূহ।
এটিকে ঘীরে নদীর দুই পারে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভীড় ছিলো। এটি বৌদ্ধ ধর্মের ঐতিহ্যবাহী একটি উৎসব হলেও সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতি ছিলো দেখার মতো। এটিকে সম্প্রীতির এক নতুন বন্ধন রচনা বলে মত তাদের।
বৌদ্ধদের প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাঁকখালী নদীতে ঐতিহ্যবাহী জাহাজ ভাসানো উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। এসময় তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ জাহাজ ভাসা উৎসব ঘীরে সকল ধর্মের মানুষের একটি সম্প্রীতির মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। এটিকে আগামী বছর থেকে আরো বেশি বড় করে আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
রামু কেন্দ্রীয় জাহাজ ভাসা উৎসব উদ্যাপন পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠিত রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎসবে পূর্ব রাজারকুল, হাজারীকুল, হাইটুপী রাখাইন পাড়া, হাইটুপী বড়ুয়া পাড়া, দ্বীপ-শ্রীকুল, জাদিপাড়া, হাজারীকুল ও মেরংলোয়া গ্রাম থেকে মোট আটটি কল্পজাহাজ নদীতে ভাসানো হয়।
জাহাজ ভাসা উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অর্পন বড়ুয়া জানান, দুইশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী ও জাহাজ ভাসানো উৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ নয়, যুগ যুগ ধরে হাজার হাজার শিশু-কিশোর ও আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মাঝে নির্মল আনন্দ ও সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় করে আসছে এ উৎসব। সারা দেশের মধ্যে শুধুমাত্র রামুতেই এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এছাড়াও কয়েক বছর ধরে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, চৌফলদন্ডিসহ চকরিয়ার মাতামুহুরী নদীতে জাহাজ ভাসানো উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।