করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী যখন সাইক্লিংয়ের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নতুন করে কথা হচ্ছে তখন ঢাকায় ঘটে গেল আরেকটি শোকাবহ ঘটনা। সাইক্লিং করার সময় রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানের লেকরোডে প্রাইভেটকার চাপায় পর্বতারোহী রেশমা নাহার রত্না (৩৩) নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে একটি প্রাইভেটকার তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
শেরেবাংলা নগর থানা জানায়, রেশমাকে একটি প্রাইভেটকার তাকে চাপা দিলে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গেল বছর ছয় হাজার মিটারের দুটি পর্বতে সফল অভিযান করে বাঙালি নারী হিসেবে বিরল অর্জনের মধ্য দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন রেশমা নাহার। তিনি ২০১৬ সালে একটি ক্লাবে যুক্ত হয়ে কেওক্রাডং এর চূড়ায় যাওয়ার মধ্য দিয়ে পর্বত আরোহণ শুরু করেন। ওই বছরই ক্লাবের সহযোগিতায় পর্বতারোহণের মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য ভারতের নেহেরু ইন্সটিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিং, উত্তরকাশি, উত্তরাখণ্ডে যান এবং পরবর্তীতে নিজ উদ্যোগে পুনরায় মৌলিক প্রশিক্ষণ, উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন।
তিনি অভিযান করেছেন মাউন্ট কেনিয়া লেনানা পিকে। এটিই তার প্রথম ৬০০০ মিটার পর্বতে অভিযান। এভারেস্ট চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল সড়কে। ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক।
এখনও যেন সড়কে খুন নিত্যদিনের স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় থেকেই এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। সেসব মানার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। চালকরা এখনও বেপরোয়া গাড়ি চালাচ্ছেন। এর ফলে দেশের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় রেশমার নিহত হওয়ার ঘটনা তদন্ত করে দায়ী চালককে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য কঠোর ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। তবেই সড়কে শেষ হয়ে যাবে না আর কোন স্বপ্ন।