ভারতের আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জে হুমকির মুখে থাকা একদল নৃগোষ্ঠীর ছোঁড়া তীরে প্রাণ হারানো মার্কিন নাগরিকের পরিবার ওই খুনিদের ক্ষমা করে দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, জন অ্যালেন চাউ ঈশ্বর, জীবন এবং দু:খী মানুষদের সাহায্য করতে ভালোবাসতো। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের সেন্টিনেলিসদের জন্যও তার ভালোবাসা ছিল।
নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপে পৌঁছাতে যে সাতজন তাকে সাহায্য করেছিলো তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চাউয়ের মরদেহ উদ্ধার করতে আরো কিছু দিন লাগবে।
সেই দ্বীপে বসবাসকারীদের বিষয়ে বা তাদের জীবন রক্ষা করার বিষয়ে কথা বলার ক্ষেত্রেও বাইরের লোকদের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এভাবে নিজেদের একঘরে করার ক্ষেত্রে তাদের মনোভাব হচ্ছে, বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ তাদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। কারণ তাদের ফ্লু বা হামের মতো সাধারণ বিষয় থেকে রক্ষা পাওয়ার মতোও নিরাপত্তা নেই।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে জনের পরিবার জানিয়েছে, সেখানে সে পুরোপুরি নিজের ইচ্ছেতেই গেছিলো। আন্দামান দ্বীপে তার যেসব বন্ধুকে আটকে রাখা হয়েছে তাদেরও যেন মুক্তি দেওয়া হয়। সে তার নিজের ইচ্ছেতেই ওখানে গেছিলো এবং সেখানে তার স্থানীয় যোগাযোগকে তার নিজের কাজের জন্য নিগৃহীত করা ঠিক হবে না।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এবং অন্তত পাঁচজন জেলেসহ সাতজন যারা তাকে সেখানে পৌঁছাতে সাহায্য করেছিলো তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা চিহ্নিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টার এবং একটি জাহাজ পাঠিয়েছে।
আন্দামান ও নিকোবার দ্বীপপুঞ্জের ডিরেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বলেছেন, আমরা দ্বীপ থেকে অনেক দূরত্ব বজায় রেখেছিলাম। তবে এখনো মরদেহ দেখা যায়নি। আরো কিছুদিন লাগতে পারে।
ওই আদিবাসীদের অভ্যাসে কোনোরকম ক্ষতি না করে উদ্ধার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
শেষদিন যখন জন ওই দ্বীপে যান, তখন তিনি স্থানীয় কিছু জেলেদের সঙ্গে নর্থ সেন্টিনেল দ্বীপে যান। পরে একটি ডিঙি নৌকা নিয়ে একাই সৈকতে যান তিনি। দ্বীপে পা রাখতেই তার উপর তীর ধনুক সহ আক্রমণ শুরু হয় বলে জানায় জেলেরা।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রিশ্চিয়ান কনসার্ন নামে যে সংস্থার হয়ে কাজ করতের জন তার প্রেসিডেন্ট জেফ কিং বলেন, তাদের সামনে সত্যকে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন জন। সেটা নিয়ে সে কথাও বলেছিলো। কিন্তু তার স্বপ্ন ভুল ছিলো।
সেন্টিনেলিস আদিবাসীরা সারাবিশ্ব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ২০১১ সালের হিসাব মতে ওই দ্বীপে আনুমানিক ৪০ জনের মতো সেন্টিনেলিজ আদিবাসী বাস করে। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগই করে না তারা।
অধিকার গোষ্ঠীগুলো জানায়, আদিবাসীরা বাইরের লোকদের হুমকিতে আছে। ঘুষের বিনিময়ে অনেকেই সেখানে বাইরের লোকদের যেতে সহায়তা করে।