স্বর্ণ নীতিমালাসহ পাঁচ দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। সংগঠনের নেতারা বলছেন, দাবির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক আশ্বাস পেয়েই কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার থেকে সারা দেশে এ ধর্মঘট পালনের কথা থাকলেও শনিবার দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলের এফবিসিসিআই-এর সম্মেলন কক্ষে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন বাজুস সহ-সভাপতি এনামুল হক খান ।
এনামুল হক খান দোলন বলেন, আমরা ধর্মঘটে যাচ্ছি না। তবে আমরা সরকারের কাছে সোনা আমদানির ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা চাই। এই নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত যাতে আমাদের হয়রানি না করা হয় সে বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
গত বুধবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে বাজুস কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় ধর্মঘট পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তখন এনামুল হক খান বলেছিলেন, সম্প্রতি আপন জুয়েলার্সে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের তল্লাশির পর সারাদেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে দিন পার করছে। শুধু রাজধানীতে নয়, জেলা পর্যায়ের শহরগুলোতেও স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা ধরণের হয়রানি করা হচ্ছে। এসব কারণে স্বর্ণ ব্যবসায় খাতটি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ আশ্বস্ত করেছেন- ‘আপনার কমিউনিটিকে বলতে পারেন, তারা যেন ধর্মঘটে না যায়। তাদের দাবির ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব’।
এসময় সেখানে বাজুস সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার, সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়াল এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৪ ও ১৫ মে শুল্ক গোয়েন্দা আপন জুয়েলার্সের গুলশান ডিসিসি মার্কেট, গুলশান এভিনিউ, উত্তরা, সীমান্ত স্কোয়ার ও মৌচাকের ৫টি শোরুমে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৩.৫ মণ স্বর্ণ ও ৪২৭ গ্রাম ডায়মন্ড ব্যাখ্যাহীনভাবে সাময়িকভাবে আটক করে। এগুলো পরে আইনানুগভাবে প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় দেয়া হয়।
আত্মপক্ষ সমর্থনে আপন জুয়েলার্স কর্তৃপক্ষকে ৩ বার শুনানির সুযোগ দিলেও তারা কোনপ্রকার বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। পরে সিল করে রাখা আপন জুয়েলার্সের শোরুম থেকে সাড়ে ১৩ মণ স্বর্ণ জব্দ করে সরকারি কোষাগারে (কেন্দ্রীয় ব্যাংককে) নেয় শুল্ক গোয়েন্দারা।
তবে আপনের মালিকপক্ষের দেয়া ১৮২ জনের তালিকার মধ্যে ৮৫ জন প্রকৃত গ্রাহককে মেরামতের জন্য জমা রাখা প্রায় ২.৩ কেজি স্বর্ণালঙ্কার অক্ষত অবস্থায় ফেরত দেয়া হয়েছে।