সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহল’ থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দলের উদ্ধার করা দু’টি মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দু’টি মরদেহের মধ্যে একটি নারীর ও একটি পুরুষের। আজ মঙ্গলবার মরদেহ দু’টির ময়নাতদন্ত করা হবে।
সোমবার দিবাগত রাতে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটে সেনাবাহিনীর এক সংবাদ সম্মেলনে মরদেহগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানানো হয়। আতিয়া মহলে আরও দুজন জঙ্গির মরদেহ পড়ে রয়েছে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের নিচতলাটি কাওসার আলী ও মর্জিনা বেগম নামে দুজন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু এ দু’টি মরদেহ তাদেরই কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না পুলিশ। সেজন্যই মরদেহ দুইটির ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে।
মরদেহগুলো এখন রাখা হয়েছে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। মোগলাবাজার থানা-পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এর আগে জঙ্গি আস্তানার খবর পেয়ে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে ঘিরে রাখা হয় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার এই বাড়িটি। শুক্রবার ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াট সিলেটে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ঘটনাস্থল ঘেরাও করে। এরপর শনিবার সকাল থেকে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো দল ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে অভিযান শুরু করে। দুপুর নাগাদ ওই বাড়িতে জিম্মি হয়ে থাকা ২৮ পরিবারের ৭৮ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় সেনাবাহিনী। তবে রাতে অভিযানস্থলের বাইরে ৩০০ গজ উত্তরের রাস্তায় দুই দফা বোমা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত এবং আরও ৪৪ জন আহত হন।
সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ওই ভবনের নিচতলায় চারজনের মরদেহ পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে দুজনের লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যানুযায়ী ওই ভবনের নিচতলায় চারজন আছেন। এর মধ্য তিনজন পুরুষ এবং একজন নারী। বাকি দুটি মরদেহে আত্মঘাতী বেল্ট লাগানো আছে। পুরো ভবনে যে পরিমাণ বিস্ফোরক আছে, তা যদি ফেটে যায়, তাতে পুরো ভবন ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই বেশ সতর্কতার সঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া সুন্দর ও সফলভাবে আজকের অভিযান শেষ হয়েছে। দিনব্যাপী অভিযান চালানো হয়েছে।
জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলে’ অভিযানে সেনা কমান্ডোদের তরফে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। অভিযানের পুরোটা সময় জুড়েই পরিস্থিতি প্যারা-কমান্ডোদের নিয়ন্ত্রণে ছিলো। তবে এখনও অভিযান পুরোপুরি শেষ হয়নি। তল্লাশি শেষ হলে ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটকে পাঠানো হবে।