সরকার আগামী বাজেটের আগেই বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ থেকে সরকারি প্রকল্পে অর্থ ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত সভায় সিঙ্গাপুর থেকে জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, শিগগির রিজার্ভ ৫০ বিলিয়ন অতিক্রম করবে। দেশের বাইরে বিনিয়োগ করলে এক বা দুই শতাংশ লাভ পাওয়া যায়। তাই প্রধানমন্ত্রী রিজার্ভ থেকে সরকারি প্রকল্পে ব্যবহারের চিন্তা করছেন। আগামী বাজেটের আগেই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ১৪ ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে এক হাজার কোটি ডলারের বেশি। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। গত ২৯ অক্টোবর তা প্রথমবারের মতো ৪১ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে তা বেড়ে ৪২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড গড়েছে।
বৈঠক শেষে অনলাইনে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ্ মোস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরব ও কাতার থেকে ৮০ হাজার টন ইউরিয়া সার কেনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে খরচ হবে ১৭৯ কোটি ৩৭ লাখ ১৯ হাজার ২৪৯ টাকা।
তিনি বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের সার ক্রয়ের প্রস্তাব ছিলে, যা বাস্তবায়নকারী সংস্থা এই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি)। এর প্রথমটি ছিল ৯ম লটে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানি, যা আনা হবে সৌদি আরব থেকে। এর ক্রয়মূল্য ছিলো ৬৬ কোটি ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৬৮৭ টাকা। এগুলো ২৬২ দশমিক ৩৭৫ ডলার প্রতি টনের দাম। একইভাবে আরেক প্রস্তাবে নবম লটের ২৫ হাজার ইউরিয়া সার কাতারের মুনতাজাত থেকে আমদানির প্রস্তাব দেয়া হয়। যার ক্রয়মূল্য ৫৫ কোটি ৮০ লাখ ১৫ হাজার ৩১২ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলোরও প্রতি টন সারের দাম ২৬২ দশমিক ৩৭৫ ডলার।
এছাড়াও বিসিআইসি কর্তৃক রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সৌদি বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (এসএবিআইসি) থেকে ১১তম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার ৫৬ কোটি ৭০ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকায় ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রতি টন সারের দাম পড়বে ২৬৭ ডলার।
সচিব জানান, ৪২ কোটি ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮০৮ টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ‘টিএ ফর বাংলাদেশ পাওয়ার সেক্টর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ক্যাপাসিটি বিল্ডিং’ প্রকল্পের আওতায় নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লি. (এনইএসসিও) এলাকায় জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমেরিকার এনআরসিএ ইন্টারন্যাশনালকে পরামর্শক নিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।