বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের মুখে চার বছর আগে হওয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনকে (৫ জানুয়ারি) যথারীতি ‘গণতন্ত্র রক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করতে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। এরই মধ্যে ওইদিন মাঠে থাকার জন্য দেশের সব সাংগঠনিক ইউনিটকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এমন কর্মসূচির লক্ষ্য কি রাজপথ দখলে রাখা? এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, ‘আমাদের সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক। দখল কথাটি কেন আসছে? আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছি, মারামারি কর্মসূচি তো দেইনি!’
শনিবার বিকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিআরটিসি বাস ডিপো পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অশান্তি চায় না। আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনা করছে। সরকার কি কখনও অশান্তি চায়?
‘‘বিএনপি তো নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছে; নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপিকে আবারও জনগণের প্রত্যাখ্যান মেনে নিতে হবে।”
এ সময় সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ৬টি পৌরসভা এবং ৪৩ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ফলের উদাহরণও টানেন ওবায়দুল কাদের। কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন উপ-নির্বাচন নিয়েও।
সম্প্রতি বিজেএমই’র সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাক নিজেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। চালাচ্ছেন গণসংযোগও।
এ প্রসঙ্গে কাদেরের বক্তব্য: ‘আমি নাকি আর কোনো কিন্তুতে যাবো না। আমাদের দল যতোক্ষণ না পর্যন্ত কাউকে নৌকা প্রতীক না দিচ্ছে; সেই পর্যন্ত কারোরই নৌকা প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ নেই। যদি কেউ নৌকা প্রতীক ব্যবহার করে থাকেন; তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-এটা আমাদের নিয়মের মধ্যে পড়ে না।’
আওয়ামী লীগ বিভ্রান্তির রাজনীতি করেনা মন্তব্য করে তিনি বলেন: সবাই জানে আওয়ামী লীগে বিভ্রান্তি সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই।আমাদের একটা মনোনয়ন বোর্ড আছে। ১৮ সদস্যের মনোনয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান দেশরত্ন শেখ হাসিনা। যখন একটি মাত্র ইউনিয়নের নির্বাচন হয় তখনও আমাদের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা বসে সিদ্ধান্ত নেন কে নৌকার প্রতিনিধিত্ব করবে। মনোনয়ন বোর্ড মনোনয়ন দেবে। এর আগে, কাউকে প্রার্থী বলবো না।
এক্ষেত্রেও বিএনপির সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেন: বিএনপির মনোনয়ন প্রক্রিয়া ভিন্ন। তারা হুট করে একজনের নাম ঘোষণা করতে পারে; আবার বাবাও তার ছেলের নাম ঘোষণা করতে পারে। আমরা বিএনপি নই, যে বাবা ছেলের নাম ঘোষণা করবো মেয়র পদে।
ড. কামাল হোসেন সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, ‘বর্তমান সংসদের অধিকাংশ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত তাই বর্তমান সংসদ অবৈধ।
তার কথার জের ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন: আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই; ১৯৭৩ আপনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেটি কি তাহলে বৈধ ছিল? আপনার কাছে এ প্রশ্নের উত্তর চাইবো।
‘‘আমাদের সংসদ যদি অবৈধই হতো তাহলে কিভাবে ইন্টার পার্লামেন্টরি ইউনিয়ন এবং কমনওয়েলথ পার্লামেন্টরি অ্যাসেসিয়েশন আমাদেরকে স্বীকৃতি দিলো? শুধু স্বীকৃতিই দেয়নি; বাংলাদেশকে আইডিয়াল ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করে তারা তাদের কনফারেন্স আয়োজন করে গেছে।”