ডাকসু নির্বাচনের দাবিতে অনশন করে টানা ১০ দিন পার করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের এম এস এস (সান্ধ্যকালীন) দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ আশরাফ। টানা অনশনে ওয়ালিদ আশরাফ ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ছেন। অনশনের সময় ওয়ালিদ শুধু পানি খাচ্ছেন। এ অবস্থায় যেকোন সময় সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে আমাদের শঙ্কা। দশদিন পার হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। বরং ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব নিয়ে প্রশ্ন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর। প্রক্টরের দাবি: সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না। একাধিক কোর্সে ভর্তি হয়ে সে নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে দাবি করছে। এই আন্দোলনের পেছনে ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য আছে। কোন মহল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন: ডাকসুর ব্যাপারে আমরা সহনশীল। এ বিষয়ে কারও কোন দ্বিমত নেই। এজন্য তাকে অনশনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। যেখানে সে অনশন করছে সেটা শহীদদের স্মৃতিবিজড়িত স্থান, সেটি নিয়েও আমরা কিছু বলিনি। কিন্তু তারা জায়গাটিকে অপবিত্র করছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নোংরা ভাষায় লেখালেখি করছে, বিতর্কিত স্লোগান দিচ্ছে। এ ধরনের কাজ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য না। তারা যদি চায় তাদের দাবি নিয়ে আমাদের কাছে আসতে পারে। আমরা তাদের কথা শুনব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের বক্তব্য ওই শিক্ষার্থীর দাবি ও উদ্ভূত পরিস্থিতিকে সাময়িক পাশ কাটানোর মতো বলে আমরা মনে করি। দেশের ইতিহাস ও আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে বর্ণিল গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য। শুধু ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও আশেপাশের পরিমণ্ডল সার্বজনীন হয়ে উঠেছে নানা কারণে-প্রেক্ষাপটে। দীর্ঘদিন ধরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যে কালো তিলকের মতো বলে আমাদের মনে হয়েছে। বর্তমানে অনশনরত ওই শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে এবং তার দাবীর যৌক্তিকতা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবেন বলে আমাদের আশাবাদ।