গায়ে প্রস্রাব করার ঘটনায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পা ধুয়ে ক্ষমা চেয়েছেন আদিবাসী শ্রমিকের কাছে। গত তিন দিন ধরে এই ঘটনায় উত্তাল রয়েছে ভারতের মধ্যপ্রদেশ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার ৬ জুলাই ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, এই ঘটনা প্রভাব পড়েছে রাজ্যের রাজনীতিতেও। যার ফলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেও আদিবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।
এমন ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তিতে যাতে কোন রকম আঁচড় না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ চৌহান। তিনি নিজেই আদিবাসীকে ডেকে নিলেন বাসবভনে।
আদিবাসী শ্রমিক দশমত রাওয়তের কাছে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে বাসভবনে ডেকে নিয়ে হাত-পা ধুইয়ে দেন তিনি নিজেই। পরিয়ে দেন উত্তরীয়। এছাড়াও তাকে উপহারও দিয়েছেন। এসময় নিজহাতে শিবরাজ খাইয়েও দেন দশমতকে। দশমতকে বাসভবনে ডেকে ‘অতিথি আপ্যায়নের’ গোটা ঘটনাটি নিজের টুইটারে শেয়ার করেন শিবরাজ।
এতে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী জুতা খুলতে যাওয়ায় দশমত ইতস্তত বোধ করেন। যদিও শিবরাজ জোর করেই জুতা খুলে নেন। তারপর দশমতকে বলেন, ‘ওই ঘটনার ভিডিও দেখে অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছিলাম। আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আপনাদের মত মানুষই আমার কাছে ঈশ্বর।’
তিন দিন আগে একটি ভিডিও সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিও-তে দেখা যায়, এক ব্যক্তি আদিবাসী এক শ্রমিকের মুখে, গায়ে প্রস্রাব করছেন। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই মধ্যপ্রদেশে সমালোচান শুরু হয়। অভিযুক্তের নাম প্রবেশ শুক্ল। গত ৪ জুলাই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সিধি জেলার কুবরি গ্রামে।
আনন্দবাজার স্থানীয়দের সূত্রে জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিজেপির সক্রিয় কর্মী। বিজেপি বিধায়ক কেদারনাথ শুক্লর ঘনিষ্ঠ। যদিও বিজেপি বিধায়ক প্রবেশের সাথে যোগাযোগের বিষয়ে অস্বীকার করেন। প্রবেশের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হওয়ায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে প্রশাসন। এমনকি বুলডোজ়ার দিয়ে তার বাড়ির একাংশ গুঁড়িয়েও দেওয়া হয়।
প্রবেশের বাবা রমাকান্ত শুক্ল বলেন, তিনি বিজেপি বিধায়কের একজন প্রতিনিধি। তাই তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে এ ধরনের কাজ করতে পারে না। ওর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে।’