রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এর উর্দু বিভাগে ফের তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে বিভাগের অফিস কক্ষ ও সেমিনার কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এসময় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পাঁচজন শিক্ষার্থী বিভাগের সামনে অবস্থান নেয়।
অবস্থান কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করে দ্রুত নতুন ফলাফল প্রকাশ, হুমকি দেওয়া শিক্ষকদের বিচারের আওতায় আনা, নম্বরপত্র সবার সামনে প্রকাশ এবং ছাত্রবান্ধব বিভাগ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন সংস্কার দাবি করেন।
এর আগে গত বছরের ২৫ আগস্ট ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফল প্রকাশ করা হয়। কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে ওই দিনই শিক্ষার্থীরা সভাপতির কক্ষে তালা ঝুলিয়ে ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা তিনদিনের মধ্যে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে সমাধান না হওয়ায় গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসে শিক্ষার্থীরা। সেদিন উপাচার্যের আশ্বাসে রাত সাড়ে আটটার দিকে অনশন ভঙ্গ করে তারা। এসময় উপাচার্যের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
ফল বিপর্যয়ের ঘটনায় ভুক্তভোগী বায়জিদ হোসেন বলেন, পরিকল্পিতভাবে আমাদের ফেল করানো হয়েছে। প্রশাসনের কাছে যখন আমরা যাচ্ছি, তখন তারা বলছে তোমরা স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরে যাও। এ কথা আগে বললে আমাদের সাত মাস নষ্ট হতো না। সাত মাস ধরে আমরা লড়ছি। আমাদের সাথে কী অন্যায় হয়েছে, তারা খুঁজে পাচ্ছে না। আমাদের কোন কোর্সে কত নাম্বার দেওয়া হয়েছে, তা আমরা দেখতে পাই না। একটা বিভাগ এভাবে চলতে পারে না। আমরা এর সমাধান চাই।
উর্দু বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, আমাদের যে শিক্ষকরা হুমকি দিয়েছে তাদের বিচার করতে হবে। তাদের ক্লাস পরীক্ষা থেকে বিরত রাখতে হবে। প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিন মাসেও রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়নি। আমাদের ফলাফল পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। এর আগে বিভাগ খুলতে হলে, আমাদের লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে।
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক আতাউর রহমান বলেন, যারা পাশ করেছে তাদের ভর্তির জন্য নোটিশ দিয়েছি। এ নোটিশ দেওয়ার পরপরই আন্দোলনকারীরা বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমি শিক্ষকদের নিয়ে বসে পরবর্তীতে কী করা হবে তা সিদ্ধান্ত নিব।
তদন্ত প্রতিবেদন জমাদানের বিষয়ে কমিটির আহ্বায়ক আইন বিভাগের অধ্যাপক এম আনিসুর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবার সাথে কথা বলেছি। সবার লিখিত বক্তব্য জমা নিয়েছি। শীঘ্রই আমরা তিনজন বসে, আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো এবং তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘আমি তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে খোঁজ নিব। সমস্যাটি সমাধানে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’