ফেডারেশন কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড। দুই গোল করে ম্যাচসেরা হয়েছেন আবাহনীর ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। প্রথম সেমিতে জিতে আগেই ফাইনালে পা রেখেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব।
এতে ১৪ বছর পর ফেডারেশন কাপের ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী ও মোহামেডানের দেখা হচ্ছে। ৩০মে বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে কুমিল্লায় ফেডারেশন কাপের ফাইনাল লড়বে ঐতিহ্যবাহী দল দুটি।
কুমিল্লার ধর্মসাগরে খেলার শুরু থেকে আবাহনী লিমিটেড গুছিয়ে আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করেছে। পঞ্চম মিনিটে ম্যাচের প্রথম সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন রহমত মিয়া। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি।
কম যায়নি শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রও, দারুণসব আক্রমণ গড়ে খেলতে থাকে ক্লাবটি। ৪-৪-২ ফর্মেশনে খেলা আবাহনীর রক্ষণ ক্রমাগত আক্রমণে কাঁপিয়ে দিতে থাকে তারা। কঠিন পরীক্ষা দিতে হয় আবাহনী গোলরক্ষক শহিদুল ইসলামকে।
অষ্টম মিনিটে লং-পাস দিয়েছিলেন শেখ রাসেলের হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস, সেটা নাগালে পেয়েছিলেন এমফন উদো। গোলকিপার শহিদুল ইসলাম সোহেল ডি-বক্সের প্রায় বাইরে চলে আসলে ফাঁকা হয়ে যায় পোস্টমুখ। কিন্তু সুযোগটি হাতছাড়া করেন এ ফরোয়ার্ড। ১২ মিনিটে আবারও সুযোগ তৈরি করেন এমফন উদো, কিন্তু বাঁ-দিক দিয়ে জায়গা বের করতে পারেননি বাধা হয়ে দাঁড়ানো আবাহনী গোলরক্ষক শহিদুলের কারণে।
ম্যাচের ১৬ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ গড়ে আবাহনী, এমেকার পাসে বক্সে বল পেয়ে যান ফয়সাল ফাহিম। কাজে লাগাতে পারেননি। তবে পেয়ে যান ম্যাচের প্রথম কর্নার। ৩৪ মিনিটে রাইটব্যাক দিয়ে দারুণ এক আক্রমণ সাজান ইব্রাহিম। আবারও বাধা হন শহিদুল। ৩৪ মিনিটে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন শেখ রাসেলের ইয়াসিন খান। দুই মিনিট পর শেখ রাসেলের এমফন উদো আবারও সুযোগ হারান।
পরে ৩৮ মিনিটে গোলের দেখা পেয়ে যায় আবাহনী, গোল করেন দানিয়েল কলিন্দ্রেস। ডিফেন্স লাইন থেকে বল ঠেলে দেন রেজাউল রেজা। প্রথম সুযোগের সঠিক ব্যবহার করেন কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড। গোলরক্ষক শহিদুলের কিছুই করার ছিল না। গোল পেয়ে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে আবাহনী। ডাইভ দিয়ে প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে হলুদ কার্ড দেখেন শেখ রাসেলের চার্লস দিদিয়ের। প্রথমার্ধের খেলা ১-০ ব্যবধানে শেষ হয়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে একটি পরিবর্তন করে মাঠে নামে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র, , হেমন্তকে তুলে নেয়। কলিন্দ্রেসের পর ৫১ মিনিটে আবাহনীকে আবারও আনন্দে ভাসান ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। বাঁ-দিক দিয়ে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফায়েল অগোস্তো শেখ রাসেলের দুই ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে বল বাড়ান ডান দিকে। গোল করেন রাইটব্যাক ফয়সাল আহমেদ ফাহিম।
ম্যাচের ৫৪ ও ৫৫ মিনিটে গোল করার সুযোগ আসে শেখ রাসেলের সামনে। সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি তারা। তারপর কিছুটা এলোমেলো খেলা শুরু করে ক্লাবটি। ৬৭ মিনিটে সুযোগ তৈরি করেন ইব্রাহিমের বদলি নামা দিপক রায়।
খেলার ৭০ মিনিটে শেখ রাসেলকে পুরোপুরি ম্যাচের বাইরে ঠেলে দেয় আবাহনী। পাল্টা আক্রমণে দানিয়েল কলিন্দ্রেসের বাড়ানো বল আক্রমণের জন্য তৈরি করে দেন রাফায়েল অগোস্তো, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম ক্রস করতে চেয়ে শট নিয়েছিলেন। বল আশরাফুল ইসলাম রানাকে পরাস্ত করে জালে চলে যায়, আবাহনী এগিয়ে যায় ৩-০ গোলে।
৩-০তে এগিয়ে থেকে বারবার আক্রমণ গড়ে আবাহনী। ৭৭ মিনিটে কলিন্দ্রেসের বল লাগে ক্রসবারে, হালি হজমের হাত থেকে বেঁচে যায় শেখ রাসেল। দ্বিতীয়ার্ধে মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি আবাহনীর হাতে চলে যায়। শেষদিকে পুরোপুরি রক্ষণাত্মক হয়ে যায় আবাহনী। শেখ রাসেল বারবার ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করলেও কাজ হয়নি।