তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে প্রথমটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টি আইনে ৪৪ রানের হারের আগে ব্যাটে লড়াকু মেজাজ দেখায় বাংলাদেশ। পরে সংবাদ সম্মেলনে এনামুল হক বিজয় ইনিংস লম্বা করতে না পারার দায় কাঁধে তুলে নিয়ে বললেন ঘুরে দাঁড়ানোর কথা।
কিউইদের অভিষিক্ত ডানহাতি পেসার জশ ক্লার্কসনের বলে পুল শট খেলতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেয়ার আগে বিজয় দিয়ে যান ৩৯ বলে ৫ চারে ৪৩ রানের ইনিংস। তার মতো ভালো শুরু পেলেও নাজমুল হোসেন শান্ত আর তাওহীদ হৃদয়ও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। সবাই মিলে আরেকটু ধৈর্য নিয়ে ব্যাটিং করলে ফলাফল পক্ষে আসতো বলেই ৩১ বর্ষী বিজয় মনে করেন।
‘পরিকল্পনা আরেকটু অন্যভাবে সাজাতে পারতাম। আমি, হৃদয় আর আফিফ ধৈর্য সহকারে যদি আরেকটু লম্বা ইনিংস খেলতাম, তাহলে আমার কাছে মনে হয় চিত্রটা ভিন্ন হতে পারত। তখন শেষ ৫ ওভারে যদি ৫০ রানও লাগত, হয়তো ম্যাচটাকে বের করে আনতে পারতাম।’
‘অনেক ভালো সুযোগ ছিল। উইকেট আর ব্যাটিং বিবেচনায় মোমেন্টাম পেয়েছিলাম, শুরুটা ভালো ছিল। সবার মধ্যে এই মানসিকতা ছিল, ম্যাচ জিততে পারবো। অবশ্যই দোষটা আমি নিতে চাই, ভুল করেছি। যদি এখানে বড় রান করে আসতে পারতাম, ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারতাম, তাহলে দলের জন্য খুবই ভালো হতো। একটা জয় দিয়ে শুরু করতে পারতাম। আসলে নিজেকে দোষী মনে হচ্ছে।’
‘আসলে এখনকার ক্রিকেটে টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা যারা সেট হচ্ছে, ওয়ানডে টেস্ট কিংবা টি-টুয়েন্টিতে তারা লম্বা ইনিংস খেলে। তাতে দলের জন্য বড় সুবিধা তৈরি হয়। দলের উপকার হয়। বড় স্কোর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমাদের টপ অর্ডারে দায়িত্বটা নিতে হবে। আজ আমি সেট হয়েছি। বড় রান হয়নি, তাই আফসোস হচ্ছে। পরে সুযোগ পেলে যেন ইনিংস বড় করতে পারি। একই শিক্ষাটা অন্য ব্যাটসম্যানদেরও। হয়তো অন্যদিন লিটন সেট হবে, সৌম্য হবে, শান্ত হবে। তারা সুযোগটা যদি পায়, তাহলে যেন বড় করতে পারে। বড় করলে স্বাভাবিকভাবে চিত্রটা বদলে যাবে।’
রোববার ডানেডিনে টস জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রথম ওভারেই নিউজিল্যান্ডের দুই উইকেট তুলে নিয়ে টাইগারদের উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। সেটি ধরে রাখতে না পারার ব্যাখ্যা দিলেন বিজয়।
‘খেয়াল করে দেখবেন যখন কার্টেল ওভার খেলা হয়, মূল বোলারদের ওভার কমে। শরিফুল পরের দিকে এক ওভারের বেশি করতে পারেনি। মোস্তাফিজ বল করতে পারে নাই। কারণ বোলাররা সর্বাধিক ৬ ওভারের বেশি বল করতে পারবে না। সেখানে আমাদের অকেশনাল বোলারদের দিয়ে বোলিং করাতে হয়েছে। যারা পরের দিকে বল করে। মূল বোলারদের ওভারগুলো বাকি থাকলে হয়তো তাদের স্কোর মিনিমাইজ করতে পারতাম। আমার মনে হয়েছে এই সমস্যাটা আমাদের হয়েছে। স্পিনাররা বল করার সময় বাতাস হচ্ছিল। সেই বাড়তি সুবিধা প্রতিপক্ষ পেয়েছে।’
নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে তাদের পেসারদের সামলাতে কষ্ট হওয়ার বিষয়টিও বলেছেন বিজয়। পরের ম্যাচের আগেই নিজেদের মানিয়ে নেয়ার কথাও বললেন।
‘ওদের পেস বোলারদের কিন্তু উচ্চতা অনেক। যখন সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার একজন বল করে, তখন বাড়তি বাউন্সের সুবিধা পায়। যেটা আমরা সাধারণত খেলে অভ্যস্ত না। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি এটা মানিয়ে নিতে পারবো। আরও দুইদিন অনুশীলনের সুযোগ আছে। আমরা নিজেদেরকে ট্রেইন করব, চিন্তা করবো কীভাবে খেলা যায়। আশা করি ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে।’