এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিমকে হত্যার পর শরীর টুকরো টুকরো করে হাড্ডি ও মাংস আলাদা করতে মুম্বাই থেকে কসাই জিহাদকে আনা হয়।
আজ শুক্রবার কসাই জিহাদ হাওলাদারকে ১২ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত জজ আদালত।
পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে: জিহাদকে মুম্বাই থেকে কলকাতায় আনে খুনের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান। বাংলাদেশি জিহাদ হাওলাদার জিহাদ পেশায় কসাই। জিহাদ ভারতের মুম্বাইয়ে অবৈধভাবে বসবাস করে, সে বাংলাদেশের খুলনা জেলার দীঘলিয়া থানার বারাকপুরের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে। মুম্বাইয়ে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করত জিহাদ।
বনগাঁ থেকে জিহাদকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি বলছে: এমপি আনোয়ারুলকে শ্বাসরোধ করে খুনের পরে গোটা শরীরের চামড়া ছাড়িয়ে নেয় খুনিরা। শরীর থেকে চামড়া ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে মাংস কাটা হয়। দেহের মাংস ছাড়াও টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছিল সমস্ত হাড়। মাংস, হাড়ের টুকরো প্লাস্টিক ব্যাগে নিয়ে বেরিয়ে যায় তারা। প্লাস্টিক প্যাকেটে মাংস, হাড় ভরে ফেলে দেওয়া হয়।
জানা গেছে পরিকল্পিত নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আক্তারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আক্তারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
আনোয়ারুল আজিম আনার ঝিনাইদহ-৪ (সদর ও কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিন বার আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন তিনি।
গত ১২ মে তিনি চিকিৎসার কথা বলে ভারতে যান। কিন্তু ১৪ মে থেকে পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। তার ব্যবহৃত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটিও বন্ধ ছিল। পরে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে থেকে দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কলকাতায় উপদূতাবাসে যোগাযোগ করে খোঁজ নিতে বলা হয়।
বুধবার কলকাতা পুলিশ জানায়, দিল্লি ও কলকাতা দূতাবাসের কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার পরই আনোয়ারুল আজিমের খোঁজে তৎপরতা শুরু করে তারা। কলকাতায় এসে এমপি আনোয়ারুল আজিম তার কথিত বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে উঠেছিলেন। ১৮ মে গোপাল স্থানীয় বরাহনগর থানায় আজিম ‘নিখোঁজ’ দাবি করে জিডি করেন।
বুধবার সকালে গোপাল বিশ্বাস স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, এমপি আজিমকে হত্যা করা হয়েছে বলে কলকাতা পুলিশ তাকে জানিয়েছে। কলকাতার নিউটাউনের বিলাসবহুল আবাসন ‘সঞ্জিভা গার্ডেনে’ এই এমপি হত্যার শিকার হন।