এই খবরটি পডকাস্টে শুনুনঃ
‘বঙ্গবন্ধু কাপ-২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডি’ টুর্নামেন্টের চতুর্থ আসর শুরু হচ্ছে আগামীকাল। এবারের টুর্নামেন্টে ১২টি দল অংশ নিচ্ছে। শুরুতে দু-গ্রুপে ভাগ হয়ে থেকে কোর্টে খেলা গড়াবে। দু-গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে, তারপর ফাইনাল। শিরোপার মঞ্চ দিয়ে ৩ জুন টুর্নামেন্ট শেষ হবে।
এবার জমকালো এ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করছে ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়া এই তিন মহাদেশের মোট ১২টি দল। বিদেশী দলগুলো ইতোমধ্যে ঢাকায় চলে এসেছে। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে নেপাল, পোল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও সাউথ কোরিয়া। ‘বি’ গ্রুপে থাকছে ইরাক, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, উগান্ডা ও জাপান।
শনিবার ম্যানেজার্স মিটিংয়ে গ্রুপিং ও ফিকশ্চার চূড়ান্ত করা হয়। এরপর ১২ দলের অধিনায়ককে সঙ্গে নিয়ে ট্রফি উন্মোচন করেন কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
রোববার বিকেল ৩টায় টুর্নামেন্টের ভেন্যু মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের সভাপতি ও পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টি-স্পোর্টস।
এরপর বিকেল ৪টায় উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী সাউথ কোরিয়া। লাল-সবুজের দলের জন্য সবশেষ দুই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা সাউথ কোরিয়া বেশ কঠিন প্রতিপক্ষই। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচ বাংলাদেশের জন্য তাই শক্তিমত্তারও পরীক্ষা।
প্রথমদিনের অন্যান্য ম্যাচে বিকাল ৫টায় মুখোমুখি হবে নেপাল ও কেনিয়া, সন্ধ্যা ৬টায় ইরাক ও জাপান এবং ৭টায় এদিনের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে থাইল্যান্ড ও উগান্ডা।
হ্যাটট্রিক শিরোপাজয়ী স্বাগতিক বাংলাদেশ এবারও শিরোপায় চোখ রেখে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রস্তুতি অব্যাহত রেখেছে। প্রথম আসরে কেনিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব দেখায়। এরপর ২০২২ সালেও সেই কেনিয়াকে ফাইনালে পরাজিত করে স্বাগতিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। তারপর ২০২৩ সালে অবশ্য চাইনিজ তাইপেকে হারিয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তোলে বাংলাদেশ।
এর আগে গত ২০ মে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) ভবনের ডাচ-বাংলা অডিটোরিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু কাপ-২০২৪ আন্তর্জাতিক কাবাডি’ টুর্নামেন্টের চতুর্থ আসরপূর্ব সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেদিন কাবাডি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘এবারের আসরের জন্য আমরা পরীক্ষামূলকভাবে নিজেদের কোচ রেখেছি। খেলাতে এবার আমরা বিদেশি কোচ আনিনি। কিছু দিন আগে খেলোয়াড়েরা বিদেশে প্রশিক্ষণ করেছে। সুতরাং আমরা আশা করছি তারা ভালো করবে।’
‘তারপর আমরা খেলোয়াড় অন্বেষণের মাধ্যমে অনেক খেলোয়াড় খুঁজে বের করব, তারপর তাদের ভারতে প্রশিক্ষণে পাঠাব। ভারতে কাবাডি একটি প্রতিষ্ঠানের মত হয়ে গেছে। ভারত অনেক বড় একটি দেশ, এবং সেখানে প্রায় ২০টির মত কাবাডি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু আমাদের এখানে সেভাবে কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। আমি আশা করব যারা বেসরকারী বিনিয়োগকারী আছেন, তারা যদি এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করেন তাহলে কাবাডি ফেডারেশনের উপকার হবে এবং কাবাডিতে আমাদের যে লক্ষ্য তা পূরণ হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ক্রিকেটের মতো কাবাডিতেও জৌলুশ আনা প্রসঙ্গে নিজের মতামত দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘খেলাধুলা এমন একটি বিষয় যেখানে বিনিয়োগ প্রয়োজন। খেলাধুলা এমনি এমনি হবে না। বিনিয়োগ করতে হলে সেখানে আপনাদের ফোকাস থাকতে হবে। স্পন্সরশীপসহ সবকিছুর সমন্বয় হলে সেই খেলাটি আস্তে আস্তে মূল্য বেড়ে যাবে। যদি বিনিয়োগ ঠিক থাকে তবে খেলোয়াড়দের সুযোগ-সুবিধা বাড়বে, তখন তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় উঠে আসবে। ক্রিকেটের বাইরে আমাদের অন্যান্য খেলাগুলোয় অর্থের অভাব আছে বলেই অন্যান্য ফেডারেশনের এ অবস্থা।’
অন্যান্য ফেডারেশনে নেতৃত্ব সংকট আছে, সেখানে আপনি এগিয়ে আসবেন কিনা? মাশরাফী বললেন, ‘আমি তো সব খেলার দায়িত্ব নিতে পারবো না। নেতৃত্ব সংকটও না, আমি জানি না কোথায় সংকট। আমি খোলা চোখে বাইরে যা দেখছি সেটা নিয়ে বলছি। আজকে কাবাডি ফেডারেশনের অনুষ্ঠানে আপনাদের এত মানুষ দেখে আমার ভালো লাগছে। তার মানে আপনাদের আগ্রহ আছে। এখন আগ্রহ অন্যান্য খেলায় নেই কেন সেগুলোর কারণ বের করে কাজ করা জরুরি।’