‘আমার প্রতিবাদের ভাষা, আমার প্রতিরোধের আগুন। দ্বিগুণ জ্বলে যেন দ্বিগুণ দারুণ প্রতিশোধে।’ -জাগরণের কালজয়ী গানটির কথাই বারবার স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন উসমান খাজা। আইসিসির বাধার মাঝেই ইসরায়েলের অভিযানের শিকার ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সমর্থনে বার্তা ঠিকই দিয়ে চলেছেন অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার।
মঙ্গলবার বক্সিং ডে টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমদিনে অজিদের টপঅর্ডার ব্যাটার জুতায় দুই মেয়ে আইশা ও আইলার নাম লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ওই জুতা পরে ব্যাটে নামেন খাজা।
প্রথম টেস্ট শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে ৩৭ বর্ষী খাজা বলেছিলেন, ‘আমি জুতায় যা লিখেছি তা রাজনৈতিক নয়। কারো পক্ষ নেইনি। আমার কাছে প্রতিটি মানুষের জীবন সমান। একজন ইহুদি, একজন মুসলিম ও একজন হিন্দু বা অন্য ধর্মের, প্রত্যেকের জীবন আমার কাছে সমান। তাদের হয়ে কথা বলছি, যাদের কথা বলা অধিকার নেই। এটা আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। যখন দেখি হাজার হাজার নিষ্পাপ শিশু মারা যাচ্ছে, ওই জায়গাতে কোনো চিন্তা ছাড়াই আমার দুটি মেয়েকে কল্পনা করি। কী হতো যদি ওখানে ওরা থাকত?’
পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনে স্লোগান লেখা জুতা পরে খেলতে চেয়েছিলেন খাজা। জুতায় লেখা ছিল- ‘সব প্রাণই সমান’, ‘স্বাধীনতা সকল মানুষের অধিকার’।
এধরনের বার্তা নিয়ে মাঠে নামার আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অনুমতি নেন খাজা। তবে ‘ম্যাচ ডে’তে এমন বার্তা বহনে খাজাকে ‘রাজনৈতিক বক্তব্যের’ আইন দেখিয়ে অনুমতি দেয়নি আইসিসি।
পার্থ টেস্টে খাজা কালো আর্মব্যান্ড পরায় আইসিসির মুখপাত্র বলেছিলেন, উসমান খাজা আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনের পোশাক ও সরঞ্জাম নিয়মের ‘এফ’ ধারা ভঙ্গ করেছেন। যার শাস্তি হিসেবে তাকে আইসিসি তিরস্কার করেছে।
বক্সিং ডে টেস্টেও খাজা শান্তির বার্তা দেয়া পায়রার ছবি জুতায় সেঁটে নামতে চেয়েছিলেন। ম্যাচের জন্য আইসিসি তা অনুমোদন করেনি। যা নিয়ে প্রতিবাদী হয়েছেন তারকা ওপেনার।
খাজা আইসিসির দ্বৈতনীতির প্রমাণ সামনে হাজির করেছেন এক ভিডিওতে। ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে তিনি নিকোলাস পুরান, মার্নাস লাবুশেন ও কেশব মহারাজের ধর্মীয় বার্তা প্রদর্শনে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থার বাধা না দেয়ার ঘটনা সামনে আনেন। এদিকে গাজায় মানবিক সংকট সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে খাজার উদ্যোগে আইসিসি ভিন্ন আচরণ করছে।
সেই ভিডিওর শুরুতে আইসিসির পোশাক এবং সরঞ্জামের নিয়মকানুন তুলে ধরা হয়। যেখানে উল্লেখ আছে যে- রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত কারণে ব্যক্তিগত বার্তাগুলোকে অনুমোদন দেয়া হবে না।