‘টিম পারফরম্যান্স’ অর্থাৎ দলগত লড়াই, চলতি এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিশেষণ এ শব্দ যুগল। ভারত, পাকিস্তানসহ আসরের সব দল পরাস্ত হয়েছে দাসুন শানাকাদের দলগত টোটকায়। সুপার ফোরে লঙ্কানদের কাছে হারলেও পাকিস্তানও কম যাচ্ছে না। মারমার-কাটকাট সংস্করণে তারাও এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটের অন্যতম দাবিদার এবার।
শক্তিমত্তা, পারফরম্যান্স, ইতিহাস বা সম্ভাবনার হিসেব-নিকেশ টানলে এবারের আসরে বাবর আজমের দলের চেয়ে এগিয়ে থাকবে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে এপর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ বার শিরোপা ঘরে তুলেছে লঙ্কান দল। পাকিস্তানের সংগ্রহে আছে দুটি শিরোপা। দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে কয়েকঘণ্টা বাদে নিজেদের ট্রফি সংগ্রহ যথাক্রমে ষষ্ঠ ও তৃতীয় করার সুযোগ থাকছে দুদলের।
টুর্নামেন্টে দাপুটে খেলে আসা শ্রীলঙ্কা গ্রুপপর্বে আফগানিস্তানের কাছে হারলেও সুপার ফোরে ধরা দিয়েছে ভিন্নরূপে। ভারত, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানকে হারিয়ে সুপারে অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠেছে ক্রিস সিলভারউডের শিষ্যরা। পাকিস্তানও দেখিয়েছে শক্তির প্রদর্শনী। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারানোর পর আফগানিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেন বাবর-রিজওয়ানরা।
শিরোপার মঞ্চে এর আগে তিনবার শ্রীলঙ্কার দেখা পেয়েছিল পাকিস্তান। ১৯৮৬, ২০০০ ও ২০১৪ সালে ওয়ানডে ফরম্যাটের আসরেও এগিয়ে শ্রীলঙ্কা, দুবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দ্বীপ দেশটি। ২০০০ সালে ট্রফি ঘরে তুলেছিল ইনজামাম-সাঈদ আনোয়ারদের দল। ২০ ওভারের খেলায় রোববার রাতে নিজেদের প্রথম এশিয়া কাপ ফাইনালে নামবেন বাবর-শানাকারা। নিজেদের সেরা একাদশ নিয়ে লড়াই করে মুকুটটাও পরতে চাইবেন প্রত্যেকেই।
এবারের এশিয়া কাপ জিতবে কোন দল— এমন প্রশ্নের উত্তরে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে শ্রীলঙ্কার পক্ষে বাজি ধরার লোক খুব একটা ছিল না। কুশল মেন্ডিস-শানাকা-হাসারাঙ্গাদের দলগত পারফরম্যান্স সেই চিন্তাধারা বদলে দিয়েছে। শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন আর ম্যাচে সবার ছোট ছোট কন্ট্রিবিউশনে বড় দলকেও সহজে হারিয়ে দিতে পারে শ্রীলঙ্কা। দলের প্রায় সব বিভাগের খেলোয়াড়ই আছেন ফর্মে।
শানাকার শ্রীলঙ্কা আরেকটি জায়গায় পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে থাকতে পারে, সুপার ফোরে ফাইনালের প্রতিপক্ষকেই সবশেষ হারানোর আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামবেন লঙ্কানরা। তবে বাবর আজমরাও ফিরতে চাইবে পুরনো ধারায়। এশিয়া কাপ জিতে অস্ট্রেলিয়ায় টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে যেতে চাইবে পাকিস্তান। নিয়মরক্ষার সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলা একাদশে আসতে পারে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত ম্যাচে শাদাব খান ও নাসিম শাহকে বিশ্রাম দিয়ে হাসান আলী ও উসমান কাদিরকে একাদশে রেখেছিলেন বাবর আজম। ফাইনালে এই দুই খেলোয়াড়কে আবারও একাদশে ফেরাতে পারেন তিনি। হংকংয়ের বিপক্ষে চোটে পড়া শাহনেওয়াজ দাহানিও ফিরতে পারেন বোলিং লাইনআপে।
এশিয়া কাপের শিরোপা সবচেয়ে বেশি জিতেছে ভারত। এপর্যন্ত আয়োজিত ১৪ টুর্নামেন্টের ৭টিতে চ্যাম্পিয়ন তারা। শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৫ বার, পাকিস্তান ২ বার। সর্বশেষ চার আসরের তিনবার বাংলাদেশ ফাইনালে খেললেও চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। ১৫তম আসরে পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা রয়েছে শিরোপার সংখ্যা বাড়িয়ে নেয়ার অপেক্ষায়।