শিল্পী তামিমার তুলিতে সেলিম আল দীনের ‘প্রাচ্য ও দ্বৈতাদ্বৈতবাদ’

নাট্যাচার্য সেলিম আল দীনের পাঁচালিজাত নাটক ‘প্রাচ্য’ দুই যুগ আগে ঢাকার মঞ্চে প্রদর্শিত হয়েছিল ঢাকা থিয়েটারের প্রযোজনায়। তারও বেশ কয় বছর পর চট্টগ্রামের প্যান্টোমাইম মুভমেন্ট মূকাভিনয়ে মঞ্চস্থ করেছিল নাটকটি। একই নাটক এবার চিত্রশিল্পী তামিমা সুলতানা চিত্রভাষায় ‘প্রাচ্য ও দ্বৈতাদ্বৈতবাদ’ শিরোনামে প্রদর্শনী করতে যাচ্ছে ঢাকার আর্ট গ্যালারি কলাকেন্দ্রে।

ঢাকা থিয়েটারের আয়োজনে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) থেকে বুধবার (৩ মে) পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এ প্রদর্শনী চিত্ররসিকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) বিকাল পাঁচটায় প্রায় ৫০টি ছবির এ প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে অতিথি থাকবেন শিল্পী আবুল বারক আলভি ও নিসার হোসেন। ‘প্রাচ্য ও দ্বৈতাদ্বৈতবাদ’ প্রদর্শনীর কিউরেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন নাট্যাচার্যের শিল্পবন্ধু নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু ও তার অনুজপ্রতীম শিল্পযোদ্ধা, চিত্রশিল্পী, অভিনেতা ও পরিচালক আফজাল হোসেন।

এই আয়োজন নিয়ে নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বলেন, ক্যানভাসে দৃশ্যশিল্প রচয়িতা তরুণ শিল্পী তামিমা সুলতানা সেলিম আল দীন’ র পাঁচালিজাত দ্বৈতাদ্বৈতবাদী নাটক ‘প্রাচ্য’র নবপ্রাণ ঘটানোর লক্ষ্যে চিত্রকলা মাধ্যমে নাটকটির প্রয়োগ ঘটাতে সচেষ্ট হয়েছেন। একাজ কঠিন বটে কিন্তু অসম্ভব নয় একথা তামিমা সুলতানার ‘প্রাচ্য’ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী প্রমাণ করে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালে শিল্পী তামিমা সুলতানা ‘প্রাচ্য’ নাট্যনির্ভর চিত্রকলা সৃষ্টির সাহসী কাজে ব্রতী হলো। আমি খুবই আশাবাদী হয়ে তাকে উৎসাহ দেই। তামিমা সুলতানা দিবারাত্র পরিশ্রম করে দ্বৈতাদ্বৈত শিল্পতত্ত্ব আমল করে তার সুনিপুণ চিত্রকলা কৌশলে আমাদের সামনে উপহার দিলেন সেলিম আল দীনের শিল্পতত্ত্বের স্বার্থকতা। জীবন ও মৃত্যু অভেদাত্মা রূপে যে সৌন্দর্য সৃষ্টি করে মানব জীবনে, প্রাচ্যের এ শাশ্বত বাণী নিশ্চিত তামিমার রেখা, রঙ ও চিত্ররূপের অবিভাজ্য কাঠামোতে ধরা পড়েছে।

আফজাল হোসেন বলেন, শিল্পী তামিমা সুলতানা সাম্প্রতিক “প্রাচ্য ও দ্বৈতাদ্বৈতবাদ” প্রদর্শনীতে যে সকল চিত্রকলা উপস্থাপন করেছেন তা ভাবনা, অনুভবের বিচারে বিশেষ। সেলিম আল দীন, তাঁর রচনা, বোধ বিবেচনার মধ্য থেকে রস রঙ গ্রহণ করে সংলাপ, দৃশ্যসমূহকে মুখর চিত্রকলায় রূপদান অনন্য ঘটনা।

এই শিল্পী আরও বলেন, শিল্পী হিসেবে বিস্ময়কর এক নতুন ভূবনে বিচরণ করতে নেমেছেন তামিমা- যা তাঁর কর্ম, ধ্যান জ্ঞান, ভাবনার জগৎকে আলাদা আগ্রহ নিয়ে দেখবার তাগিদ তৈরি করে দেবে। একই সাথে তামিমার এই উষ্ণ আন্তরিক নিবেদন, নতুন ধরনের চেষ্টা সকল চিত্ররসিক মনে নিশ্চয়ই নতুন স্বাদের আগ্রহ ও কৌতুহল সৃষ্টি করতে সক্ষম হবে। এ আয়োজন হবে আনন্দময় অভিজ্ঞতা।

তামিমা সুলতানা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে মেধা তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে মাস্টার ডিগ্রী সম্পন্ন করেন ২০১২ সালে। ২০১১ সালে তিনি তার ইনস্টিটিউটের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী হিসেবেও পুরষ্কার পেয়েছেন। তামিমা ২০০০ সালে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে স্বর্ণ পদক অর্জন করেছিলেন।

বর্তমান প্রদর্শনী সম্পর্কে তামিমা বলেন, ‘দ্বৈতাদ্বৈতবাদী ধারণায় আকৃষ্ট হয়ে তিনি শিল্পের নব রস আস্বাদনে ক্যানভাস থেকে ক্যানভাসে ঘুরে বেড়িয়েছেন। শিল্পী জানান, করোনাকালীন ছবি আঁকার বিষয়ে তিনি মনোযোগী হন ও পরবর্তী দুই বছরের নিরবচ্ছিন্ন সাধনায় কাজটি সম্পন্ন করেন।

বিজ্ঞাপন

আফজাল হোসেনচিত্রচিত্রশিল্পীতামিমানাসিরউদ্দীন ইউসুফলিড বিনোদনসিনেমাসেলিম আল দীন