পিসিওএস রোগে ওজন নিয়ন্ত্রণের ৩ উপায়

এমন অনেক মেয়ে আছেন যাদের ওজন সহজে কমে বা বাড়ে না। শুধু তাই না ঋতুস্রাবে অনিয়ম, মুখে অবাঞ্ছিত লোম, ব্রণ এই সব সমস্যার কারণ হতে পারে পিসিওএস। পিসিওএস হচ্ছে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম একে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজও (পিসিওডি) বলা হয়। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া ও মশলাদার খাবার খাওয়া, ওজন বেড়ে যাওয়া, মানসিক চাপ এবং হরমোনাল ইমব্যালান্সের কারণে পিসিওডি হয়। পেটে চর্বি জমে, ওজন বাড়ে, বন্ধ্যাত্ব এবং চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়।

মূলত দু’টি ক্ষেত্রেই শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে না। পিসিওডির ক্ষেত্রে ওভারি সাধারণত অপরিণত কিংবা আংশিক পরিণত ডিমে ভরে যায়। ফলে পরবর্তী সময়ে তা জমে জমে সিস্টে পরিণত হয়।

পিসিওএস আবার আলাদা। এটি মূলত মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। এই রোগে আক্রান্ত হলে পুরুষালি হরমোনের আধিক্যের কারণে শরীর ও মুখে অবাঞ্ছিত রোমের প্রবণতা বাড়ে। ব্রণ, অ্যাকনের মতো সমস্যা দেখা দেয়। চুল ঝরে যায়। ওজনও বাড়ে। এ ছাড়াও আছে প্রজননের সমস্যা এবং ভবিষ্যতে উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ারও আশঙ্কা থেকে যায়।

পিসিওডি-র সমস্যা থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হিমশিম খেতে হয় মহিলাদের। জেনে নিন এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে কী ভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখবেন।

১) ডায়েট
কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কমিয়ে আনতে হবে। বদলে ফাইবারযুক্ত খাবার, স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং পরিমিত প্রোটিন খেতে হবে। সাধারণ ভাত-রুটির বদলে ব্রাউন রাইস, আটার রুটি, ব্রাউন ব্রেড খেতে হবে, যাতে আছে লো গ্লাইসেমিক রেট। রান্না করা যেতে পারে অলিভ, ক্যানোলা, পিনাট বা আমন্ড অয়েলে। সেটা সম্ভব না হলে রান্নায় ব্যবহৃত তেলের পরিমাণ কমাতে হবে। সবুজ শাক, আনাজপাতি বেশি করে খাওয়া দরকার। তবে আম, কলা, আতা, আঁখ, কাঁঠাল বাদ দিলে ভাল হয়। ভাল মানের প্রোটিনও জরুরি। ডিম খেতে হলে কুসুম বাদ দিয়ে খেতে পারেন। অতিরিক্ত তেলযুক্ত মাছ নয়। দুধ খেলে লো ফ্যাট মিল্ক নিন। ডাল, ব্রকোলি, বেরি নিয়মিত খেতে পারেন।

২) না খেয়ে না থাকা
পিসিওডি সমস্যা থাকলে খুব বেশি ক্ষণ খালি পেটে থাকবেন না। অনেকেই ওজন ঝরানোর জন্য খাবার পরিমাণ কমিয়ে নেন, দীর্ঘ ক্ষণ খালি পেটে থাকেন— এই অভ্যাস কিন্তু মোটেই ভাল নয়। এর ফলে বিপাকহার কমে যায়, অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার প্রতি ঝোঁক আরও বাড়ে।

৩) ব্যায়াম
ব্যায়াম শারীরিক কসরতের মাধ্যমে যতটা সম্ভব সচল থাকলে, তা সাহায্য করবে এই রোগ মোকাবিলায়। ব্রিস্ক ওয়াকিং, যোগাভ্যাস, জগিং, স্কিপিং, সাঁতার কাটা। নিয়ম করে যে কোনও কিছু রোজ করতে হবে। ওজন যত কমবে, পেটের মেদ যত ঝরবে, ততই সুস্থ থাকবে শরীর। তাই পিসিওডি এবং পিসিওএস রুখতে হাতিয়ার করুন নিয়মিত খাওয়াদাওয়া এবং সংযত জীবনযাপনকে।

বিজ্ঞাপন

ওজন নিয়ন্ত্রণপলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমপিসিওএস