স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, সচেতন না হলে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ‘খাদ্যের কথা ভাবলে, পুষ্টির কথাও ভাবুন’ শীর্ষক জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহের উদ্বোধন এবং আলোচনা সভায় তিনি এ আশঙ্কার কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, হঠাৎ করে করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেল কেন, দ্বিতীয় ঢেউ এলো কেন? করোনার প্রথম ঢেউ আমরা ভালোভাবেই সামাল দিয়েছিলাম। মৃত্যুর হার দিনে ৭ থেকে ৮ জনে নেমে এসেছিল। আমাদের দেশে সংক্রমণ কমে দৈনিক সাড়ে তিন থেকে চারশো হতো। হঠাৎ করেই সেই সংক্রমণ ৭ হাজারে উঠে গেল কেন? মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ হয়ে গেল কীভাবে? এই বিষয়গুলো দেখতে হবে। বিষয়গুলো আমরা যদি চিহ্নিত না করতে পারি, তাহলে আমাদের আবার তৃতীয় ঢেউয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। আমরা আবারও করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত হতে পারি। সুতরাং সেই দিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা করোনার বিস্তার রোধে বিয়ে, জন্মদিনসহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ করেছি। জনসমাগম নিরুৎসাহে সব ধরনের সভা-সমাবেশ সীমিত করা হয়েছে। করোনার উৎপত্তি হতে পারে এমন স্থানসমূহ এবং পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। ধর্মীয় ওয়াজ মাহফিলসহ সব ধরনের মেলা, পিকনিক বন্ধ রয়েছে। এভাবে কিছুদিন চললে আশা করা যায় করোনা সংক্রমণের হার কমে আসবে।
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা আর কত চিকিৎসা দেব, হাসপাতলে আর কত শয্যা বাড়াবো? কত হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা দেব, আমরা কত অক্সিজেনের ব্যবস্থা করবো? হাসপাতালতো আর রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না।’’
‘হাসপাতালের বেডওতো রাতারাতি বৃদ্ধি করা যায় না। তারপরেও আমরা এই অল্প সময়ের মধ্যে আড়াই হাজার বেড থেকে ৭/৮ হাজার বেড বৃদ্ধি করেছি। দশ গুণ রোগীও আমরা সামাল দিতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু তারপরও বাড়লে আর সম্ভব হবে না। সেই জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। আমরা চাই করোনা থেকে যেন আমরা রক্ষা পাই।’
সুষম খাবার বেশি খাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, পুষ্টি সপ্তাহে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি শাক-সবজি, ফলমূলসহ সুষম খাবার খেতে হবে। তেল, চিনি, লবণ কম খান। এ বার্তা আমরা মানুষকে দিতে চাই।
জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের দেশে ১০ শতাংশ মানুষ এখনো পুষ্টিহীনতায় ভোগে। পুষ্টির অভাবে ডায়াবেটিসসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে। পুষ্টির দিকে ঘাটতি থাকলেও আশপাশের দেশ থেকে ভালো। এমনকি ভারতের থেকে পুষ্টির দিক থেকে আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার খুরশিদ আলম, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক শাহানারা বেগম।
জাতীয় পুষ্টিসপ্তাহের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া।