দেশের শিল্প খাতের প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে বিনিয়োগের নতুন ও সম্ভাবনাময় খাত খুঁজে বের করতে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি এম আবদুল হামিদ।
মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৬’ বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে বিদেশি বিনিয়োগের একটি চমৎকার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সরকারের প্রতিও পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্পায়নের কাঙ্খিত লক্ষ্য অজর্নে বেসরকারি খাতের বিকাশের কোন বিকল্প নেই। বেসরকারি খাত যত বেশি শক্তিশালী হবে, শিল্পায়নের ধারা ততো বেশি বেগবান হবে।
টেকসই ও পরিবেশবান্ধব শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে সরকার নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সরকার দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। এর মাধ্যমে এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্য অর্জনও এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ৪০ শতাংশে উন্নীত করা আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অর্থনৈতিক দর্শন অনুসরন করে বাংলাদেশ অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে।
আবদুল হামিদ বলেন, এ বাস্তবতা বিবেচনা করে সরকার বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিয়ে আসছে। বিশেষ করে এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের সিঙ্গেল ডিজিট সুদে ঋণ প্রদান এবং এসএমই নারী উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ ও অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্লট বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, কর রেয়াতসহ বিনিয়োগে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দেয়ায় দেশের শিল্প খাতে দেশি-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ছে। বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসম্পদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্র সীমায় বিপুল পরিমাণ মৎস্য, সামুদ্রিক, খাদ্য, তেল, গ্যাসসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এটি দেশে ব্লু-ইকোনমি সম্প্রসারণে ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি ও সময়োপযোগী কর্মপরিকল্পনায় দেশের শিল্প খাত সমৃদ্ধ হয়েছে এবং গুনণগত পরিবর্তন হয়েছে। মোট জাতীয় উৎপাদনে শিল্প খাতের অবদান ক্রমন্বায়ে বাড়ছে। কর্মসংস্থান, সঞ্চয় ও বিনিয়োগে ইতিবাচক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে।
তিনি বলেন, শিল্প খাতে দূরদর্শী ও উদ্যোক্তা-বান্ধব নীতির ফলে দেশে সবুজ শিল্পায়নে ধারা জোরদার হয়েছে। তৈরি পোশাক, চামড়া, ওষুধ, জাহাজ নিমার্ণ , বাইসাইকেল, জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া সিরামিক, প্লাস্টিক, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিকসহ বেশকিছু শিল্প বিশ্বমানে উন্নীত হয়েছেএবং বিদেশে রফতানি হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি পরে অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসাবে ৬ ক্যাটাগেরিতে ১৩টি শিল্প ইউনিটকে রাষ্ট্রপতি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমু, মন্ত্রনালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ্, পুরস্কার বিজয়ী মনির হোসেন বক্তব্য রাখেন। সূত্র: বাসস