বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের স্ত্রী এবং পঁচাত্তরের পর আওয়ামী লীগের অন্যতম কাণ্ডারী সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডে স্বামী নিহত হওয়ার পর অনেক সংগ্রাম করে বড় করে তুলেছেন সন্তানদের। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে তার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিলো দিশেহারা জাতিকে সঠিক পথের নির্দেশনা। এই মহিয়সী নারী তাই সেসময় গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। সে লক্ষ্যে ছুটে বেড়িয়েছেন দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। কাজ করে গেছেন আজীবন।
মহিয়সী এ নারীর মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করে তার ছেলে তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি তার মায়ের মুখে শোনা একটি কথার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন ‘আমার ক্ষতির চেয়ে জাতির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। আর তাই আজ আমি আমার রক্তে মাখা আঁচল নিয়ে আপনাদের কাছে বিচার দিয়ে গেলাম।’
ফেসবুক পোস্টে সোহেল তাজ লিখেছেন: ‘আজ আমার মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী
১৯৭৫ এর ১৫ই অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করার পর এবং ৩রা নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পর যখন দেশ ও জাতি দিশেহারা ঠিক তখন এই মহিয়সী নারী ঝাঁপিয়ে পড়েন জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য। আর এই জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডগুলোর বিচারের দাবিতে।
আমার স্মৃতিতে সেই দিনগুলো এখনো সংরক্ষিত হয়ে আছে- সেই দিনগুলো যখন আমার মা ছুটে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে- টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া। অনেক সময় আমাকে সাথে নিয়ে যেতেন বিভিন্ন মিটিং আর অনুষ্ঠানে।
আমার মাকে বলতে শুনতাম ‘আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি, আমার সন্তানেরা এতিম হয়েছে কিন্তু জাতি হারিয়েছে বঙ্গবন্ধুকে আর জাতীয় চার নেতাকে, আমার ক্ষতির চেয়ে জাতির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো, আর তাই আজ আমি আমার রক্তে মাখা আঁচল নিয়ে আপনাদের কাছে বিচার দিয়ে গেলাম।’