নির্বাচনে ভোট দিতে জনগণের অনাগ্রহ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনাস্থার প্রকাশ কিনা এ বিষয়ে এখনই মন্তব্য করার সময় আসেনি বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সাথে মতবিনিময় সভা করেন ওবায়দুল কাদের।
ওই সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদেরের কাছে চ্যানেল আই অনলাইনের প্রশ্ন ছিল: উপজেলার পর ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। ভোট প্রদানে অনাগ্রহ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগণের অনাস্থার প্রকাশ হিসেবে দেখছে কিনা আওয়ামী লীগ?
এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন: আমি ঠিক এভাবে বলব না। কিছু কিছু বিষয় এখানে আছে যেগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণের দরকার। হুট করে আমি একটা মন্তব্য দিতে পারি না।
এ নিয়ে দলে আলোচনা আছে জানিয়ে তিনি বলেন: এটা নিয়ে আমাদের দলে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। নির্বাচনের সকল টার্ম, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির ভূমিকা সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টা নিয়ে আমি আশা করি আমাদের পরবর্তী ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে নেত্রীর উপস্থিতিতে আলোচনা হবে।
এসময় আওয়ামী লীগ দল হিসেবে অতীতের ভুলত্রুটি ভবিষ্যতে পেরিয়ে নবতর পথ যাত্রা শুরু করবে বলে সাংবাদিকদের জানান ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংগঠনিক এ নেতা।
‘শক্তিশালী গণতন্ত্রের জন্য আওয়ামী লীগ শক্তিশালী বিরোধী দল চায়’ দাবি করে তিনি আরও বলেন: বিরোধীদল শক্তিশালী থাকুক, তারা বিজয়ী হোক এটা আমরা চাই। সেই দায়িত্বটা যদি বিরোধীদল পালন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা তো নির্বাচনে পরাজিত হবে; রাজনীতিতেও তারা পরাজিত হবে।
নির্বাচনে পরাজিত হয়ে বিএনপি হতাশায় ভুগছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। বলেন: তারা নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ না, জনগণকে কিভাবে ঐক্যবদ্ধ করবে?
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারাবন্দী হওয়ার দু’বছর পূর্তিতে শনিবার ঢাকায় সমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। সমাবেশ থেকে তাদের নেত্রীর মুক্তির কঠোর বার্তা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ভাবনা কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন: দেশের রাজনীতিতে বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বহমান। বর্তমান প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করে এবং বিশ্বাস করে। সেই সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। এ অবস্থায় যতদিন বিএনপি এই সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়বে না, ততদিন আন্দোলন ও রাজনীতি সফল হবে না। নেতিবাচক, সাম্প্রদায়িক, জঙ্গিবাদী উগ্রপন্থীরা আন্দোলনে ও নির্বাচনেও সফল হবে না।
এসময় বিগত দিনে যেসকল সহযোগী সংগঠন এবং ঢাকার দুই সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে তাদের চলতি মাসের মধ্যে কমিটি পূর্ণাঙ্গ করে আওয়ামী লীগ সভাপতির দপ্তরে জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও এসময় জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আর যেসব সহযোগী সংগঠন এবং সাংগঠনিক জেলার কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে এপ্রিল মাসের মধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন: সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন: ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়া খাতুন, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার, সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, ছাত্রলীগের সভাপতি লেখক ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক আল নাহিয়ান জয়সহ অনেকে।