দীর্ঘদিন ধরেই শাকিব খানের সঙ্গে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ১৮টি সংগঠন নিয়ে গঠিত চলচ্চিত্র পরিবারের দ্বন্দ্ব চলছে। চলচ্চিত্র পরিবার সম্প্রতি শাকিব খানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই সঙ্গে শাকিব খানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমিতিগুলোর সদস্যদের কাজ করতেও নিষেধ করা হয়। যারা শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করবে তাদের সদস্যপদ বাতিল করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চলচ্চিত্র পরিবারের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শাকিব খান ‘আমি নেতা হব’ নামের একটি ছবির কাজ শুরু করেন। শাকিব খানের সঙ্গে সেই ছবিতে শিবা শানু, মৌসুমী, মিম, ওমর সানী, কাজী হায়াৎসহ আরও অনেকে কাজ করেন। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ১০ জন শিল্পীর সদস্যপদ বাতিল করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়। শিগগিরই কার্যকর হবে বলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে তার সঙ্গে কাজ করার কারণে অন্য শিল্পীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়টি নিয়ে ক্ষেপেছেন শাকিব খান। জানা গেছে, নিষিদ্ধ হতে যাওয়া অন্য শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজকদের নিয়ে শাকিব খান পাল্টা সংগঠন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন। গত ২৬ আগস্ট শানিবার রাতে ওমর সানীর রেস্টুরেন্ট ‘মেরি মন্টানা’য় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রাথমিক মিটিং করেন। যদিও ওমর সানী চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেছেন, সেখানে গেটটুগেদারের বাইরে অন্য কোন কারণ ছিল না। তবে রাত পোহাতেই চলচ্চিত্র পাড়ায় খবর রটে যায় সানীর রেস্টুরেন্টে পাল্টা সংগঠন তৈরির পরিকল্পনা করা হয়।
গতকাল ২৭ আগস্ট রোববার রাতে পাল্টা সংগঠনের গুঞ্জন বাস্তবে পরিণত হয়। কারণ এদিন রাতে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘বেপরোয়া’ ছবির মহরতে হঠাৎ এসে হাজির হন শাকিব খান। অন্য কারও সিনেমার মহরত অনুষ্ঠানে শাকিব খানকে দেখা যায় না। ফলে জাজের অনুষ্ঠানে শাকিবের উপস্থিতি ভিন্ন ইঙ্গিত নিয়ে হাজির হয়। শুধু তা-ই নয়, অনুষ্ঠান শেষে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ, প্রযোজক নাসির উদ্দিন দিলুসহ আরও অনেকের সঙ্গে একান্ত মিটিংয়েও অংশ নেন। এ মিটিংয়ে চিত্রনায়িকা ববি, প্রযোজক ইকবাল, কাজী হায়াৎ, শিবা শানু, নাদের চৌধুরীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
মিটিং বা পাল্টা সংগঠনের ব্যাপারে শাকিব খান কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এটা আমাদের ব্যক্তিগত মিটিং ছিল। এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না। আর সংগঠন হবে কিনা সেটাও অনিশ্চিত। কিছু করলে আমরা সংবাদ সম্মেলন করে জানাব।’
এ বিষয়ে কাজী হায়াৎ বলেন, ‘যখন কোনো সংগঠন এক বা একাধিক ব্যক্তিকে নিষিদ্ধ করে, অবাঞ্চিত করে তখন তাদের নিজস্ব নিরাপত্তার স্বার্থেই তারা একতাবদ্ধ হয়। যদি কোনো নতুন সংগঠন তৈরি হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে নতুন সংগঠনের ব্যাপারে আমিও শুনেছি। যে একটা নতুন সংগঠন হচ্ছে । এখানে কে বা কারা করছে সেটা আমি জানি না।’
এদিকে গোপন সূত্রে জানা গেছে, পাল্টা সংগঠন তৈরির ব্যাপারে আজ ২৮ আগস্ট সোমবার সন্ধ্যায় জাজ মাল্টিমিডিয়ার কার্যালয়ে আরেকটি মিটিং হওয়ার কথা আছে। সেখানে সংগঠনের নাম নির্ধারণসহ চূড়ান্ত কমিটি গঠন ও সংগঠনের প্রশাসনিক কাজকর্মের বিষয়গুলো ঠিক করা হবে। আর সবকিছু ঠিক থাকলে ১০ অথবা ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকা ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে।
লেখা ও ছবি: সুদীপ্ত সাইদ খান