শরণার্থী শিবিরের শিশুদের জন্য তাদের মাতৃভাষা নির্ভর ডিজিটাল ক্লাস এবং রাস্তায় মেয়েদের নিরাপদ চলাচলে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতের উদ্ভাবনী প্রতিভা দেখিয়ে এবছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের আসরে যাচ্ছেন বাংলাদেশের দুই তরুণ। তবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নয়, টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের ‘শান্তির জন্য ডিজিটালাইজেশন’ নির্ভর বৈশ্বিক আয়োজনে বিশ্বের ১২ টি দেশের তরুণদের সঙ্গে তারাও উপস্থাপন করবেন নিজেদের ভাবনা।
টেলিনর ইয়ুথ ফোরামের বাংলাদেশ রাউন্ড থেকে নির্বাচিত এই দুই তরুণ হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র শিক্ষার্থী মিয়া মো খেইং ও রাকিব রহমান শাওন। আগামী ডিসেম্বর মাসে নরওয়ের অসলোতে বৈশ্বিক অনুষ্ঠানের মূল আয়োজনে অংশ নেবেন তারা।একই সময় অসলোতে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের আসরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ পাবেন নির্বাচিত এই দুই তরুণ-তরুণী।
নারীর জন্য নিরাপদে-স্বাচ্ছন্দে চলাচল নিশ্চিত করা এবং হয়রানি মুক্তির জন্যই মিয়ার পরিকল্পনার নাম ‘মুক্তি। আর শরণার্থী শিবিরে প্রযুক্তির মাধ্যমে রোহিঙ্গা, সিরিয় শরণার্থী শিশুদের মতো লাখো শরণার্থী শিশুর জন্য মাতৃভাষায় ডিজিটাল ক্লাসের ব্যবস্থা করতে শাওনের ধারণার নাম ‘মেক দেম স্ট্রং’।
রোববার জিপিহাউজে আয়োজিত বাংলাদেশ রাউন্ডের চূড়ান্ত পর্বের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, শিক্ষা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের প্ল্যাটফর্ম থেকে শেখার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আমি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আয়োজন সম্পর্কে বলতে গিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্টদূত সিসেল ব্লেকেন বলেন, তোমাদের ধারণা এবং উদ্ভাবনগুলো বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। টেলিনর ইয়ুথ ফোরাম এবং ডিজিটালাইজেশন ফর পিস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এদের বাস্তবায়ন করতে আমি তোমাদের আহবান জানাচ্ছি।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলি বলেন, ‘আজকে যেসব অসাধারণ ধারণা উপস্থাপিত হয়েছে তা আমাকে উজ্জীবিত করেছে, কারণ এর সবগুলোই বাংলাদেশকে আরো ভালো একটি দেশে পরিণত করার ইচ্ছা প্রকাশ করছে।’
নোবেল পিস সেন্টার (এনপিসি) ও টেলিনর গ্রুপ আয়োজিত ইয়ুথ ফোরাম ১৩টি দেশের ১৮ থেকে ২৮ বছরের তরুণ-তরুণীদের জীবন বদলানো ধারণা উপস্থাপনের সুযোগ দেয়। এ বছর প্রায় ১৫’শ বাংলাদেশি তরুণ-তরুণী এই কর্মসূচীতে অংশ নিতে আবেদন করেন। তাদের মধ্যে বাছাই করা ৭ জনকে নিয়ে আজ বাংলাদেশে এর চূড়ান্ত নির্বাচনী পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
চূড়ান্তে পর্বে ৭ জন প্রতিযোগীর ৭ টি আইডিয়া বা প্রযুক্তির উদ্ভাবনী প্রয়োগ থেকে মিয়া মো খেইং এবং রাকিব রহমানের প্রকল্প দু’টি নির্বাচন করা হয়।