সিগারেটসহ তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেটে রঙিন ছবিসহ সতর্কবাণী ছাপানোর ব্যাপারে তাগাদা দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে চিঠি পাঠিয়েছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। তামাক কোম্পানিগুলো সরকারি নীতি মানতে টালবাহানা করছে বলেও মন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেন তিনি।
চিঠিতে সাবের হোসেন চৌধুরী লিখেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৫৬তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে সই করা ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ সরকার ‘ধুমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৩’ প্রণয়ন করে। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, কেনা-বেচা ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে প্রণীত আইনটি বাস্তবায়নের জন্য পরে ২০১৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা’ পাশ হয়।
গত বছরের ১৯ মার্চ কার্যকর হওয়া ওই আইনে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের ১৯ মার্চের মধ্যে সিগারেটসহ সব তামাকজাত পণ্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটার দু’পাশেই অর্ধেক জুড়ে ওপরের অংশে ওই পণ্য ব্যবহারে হওয়া ক্ষতির রঙিন ছবি ও লেখাসহ সতর্কবার্তা ছাপানো বাধ্যতামূলক। কিন্তু এসব সচিত্র সতর্কবাণীর সরকারি উদ্বোধন হলেও বহুজাতিক তামাক কোম্পানিগুলো আইনটি বাস্তবায়নে নানা অজুহাত দেখাচ্ছে।
সাবের হোসেন চৌধুরী কোম্পানিগুলোর যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘তাদের বক্তব্য, যেহেতু আইন (২০১৩) অনুযায়ী সচিত্র সতর্কবাণী এমনভাবে মুদ্রণ করতে হবে যাতে তা স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল দ্বারা ঢেকে না যায়, (প্রচলিত পন্থায় স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল লাগালে প্যাকেটের পিছনের তলে ছবিযুক্ত সতর্কবাণী ঢেকে যাবে) সেহেতু ছবিযুক্ত সতর্কবাণী প্যাকেটের উপরিভাগে পঞ্চাশ শতাংশের পরিবর্তে নিচে মুদ্রণ করতে হবে।’
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
চিঠিতে কোম্পানিগুলোর দেখানো এই ‘সমস্যা’রও সমাধান দিয়েছেন এমপি। তিনি বলেছেন, ২০১১ সালের নির্দেশনা অনুযায়ী স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল ছাড়া প্যাকেট বাজারজাত করা যাবে না। সুতরাং সামনে-পেছনে লাগানোর পরিবর্তে একপাশ দিয়ে স্ট্যাম্প বা ব্যান্ডরোল লাগালে আর সতর্কবাণী ঢাকবে না। এর একটি নমুনা ছবিও তিনি চিঠির সঙ্গে পাঠিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে।
সাবের হোসেন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০০৪ সালের তথ্য অনুসারে প্রতিবছর তামাকজাতীয় দ্রব্যের কারণে আমাদের দেশে মারা যায় ৫৭ হাজার মানুষ। পঙ্গু হয় আরো ৩ লাখ ৮২ হাজার। সর্বশেষ তথ্য প্রকাশিত হলে সংখ্যাটি হয়তো আরো বেশি হতে পারে।
তাই ঠিক সময়ে ছবিযুক্ত সতর্কবাণী ছাপানো শুরু করা না গেলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তামাকের ছোবল থেকে রক্ষা করা যাবে না বলে এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তিনি।