প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই দেশে কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে কথা বলার অধিকার কারো নেই। এদেশে সবার অধিকার সমান। প্রত্যেকে নিজের এবং অন্যের ধর্মকে সম্মান করবে, এমন বাংলাদেশর জন্যই কাজ করছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সনাতন ধর্মালম্বীদের জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
সনাতন ধর্মালম্বীদের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমি শনিবার। এ উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধিরা গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্যে সনাতন ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম, বর্ণ গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবাই যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে, এদেশে সবার অধিকার সমান। এই দেশে সবাই মাতৃভূমির অধিকার নিয়ে বসবাস করবে। কাউকে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেয়া মেনে নেবে না। জনগণ যার যার ধর্ম পালন করবে। কেউ যদি তার ধর্ম পালন করতে না চায় সেটা তার ব্যাপার। কিন্তু অন্যের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অধিকার তার নেই। তিনি আরো বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে বক্তব্য দেয়া সহ্য করা হবে না এবং এর থেকে সবাইকে বিরত থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সব ধর্মেরই মূল কথা শান্তি। সবাই মিলে বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। স্বাধীনতার লক্ষ্য ছিলো দেশে কোনো সম্প্রদায়িক মতবিরোধ থাকবে না এবং সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ অধিকার নিয়ে বসবাস করবে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো স্বাধীনতার পর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা। তিনি সংবিধানে সকল ধর্মের সমান অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসকরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংসের পাশাপাশি সংবিধানকেও পদদলিত করে।
দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাসহ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে বিজয়ী করার জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এর ফলে তার সরকার সংবিধান সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।
ক্ষুধা দারিদ্রমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে যার যার অবস্থান থেকে অবদান রাখার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কাজল দেব নাথ, সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি রমেশ ঘোষ, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জে এল ভৌমিক এবং জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি দেবাশীষ পালিতও বক্তৃতা করেন।মঞ্চে ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী দুর্বেশানন্দ এবং চট্টগ্রামের স্বামী সুধর্ষানন্দ উপস্থিত ছিলেন।