পরিবারের কাউকে রেহাই দেয়নি করোনাভাইরাস। একে একে আক্রান্ত হয়েছেন সবাই। একমাত্র ছোট ভাই, ম্যাশ নিজে, স্ত্রী, দুই সন্তান, বাবা-মা, কেউই রক্ষা পাননি কোভিডের আক্রমণ থেকে। মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার পরিবারে ‘করোনা’ ঝড় হয়েই এসেছিল।
বাকিরা সুস্থ হয়ে উঠেছেন দ্রুতই। মাশরাফীর নিজের সুস্থ হতেই যা একটু বেশি সময় লেগেছে। করোনার কঠিন সময়ে নড়াইল-২ আসনের মানুষদের সুরক্ষিত রাখতে অনলাইন-অফলাইনে নিরন্তর কাজ করে গেছেন জনপ্রতিনিধি মাশরাফী।
এতকিছুর ধকলে খেলা ভুলেই ছিলেন মাশরাফী। করোনার প্রভাবে শারীরিক দুর্বলতা থাকায় খেলেননি বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে। সাত মাসের করোনা বিরতির পর ওয়ানডে আসরটি দিয়ে ক্রিকেটের চাকা ঘোরে বাংলাদেশে।
ক্রিকেটে ফেরার মিশনে অনুশীলনে নামতেই পড়েছেন ইনজুরিতে। বঙ্গবন্ধু টি-টুয়েন্টি কাপের মাঝপথে চোট কাটিয়ে ফিট হয়েছেন। লটারিতে নড়াইল এক্সপ্রেসকে পেয়েছে জেমকন খুলনা। যে দলে আছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসানদের মতো আইকন ক্রিকেটাররা।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
দল ঠিক হওয়ার পর সোমবার মিরপুরের একাডেমি মাঠে একক অনুশীলন করেন মাশরাফী। সেন্টার উইকেটে বোলিং করেছেন। লাইন-লেন্থ ছিল নজরকাড়া। যেখানে মার্কার বসিয়েছেন, সেখানেই বারবার বল হিট করাচ্ছিলেন। লেন্থের সঙ্গে লাইনও ছিল নিখুত, স্টাম্প ভেঙেছেন বেশ কয়েকবার।
সোমবারই বিসিবির জৈব সুরক্ষা বলয়ে (বায়ো সিকিউর বাবল) ঢুকে পড়বেন মাশরাফী। সন্ধ্যায় টিম হোটেলে উঠবেন। মঙ্গলবারের ম্যাচে মাঠে দেখা যেতে পারে তাকে। সেদিন সন্ধ্যার ম্যাচে খুলনার প্রতিপক্ষ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম।
খুলনা শেষ তিন ম্যাচ জিতে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ৬ ম্যাচে তাদের ৮ পয়েন্ট। প্লে-অফের আগে মাশরাফীদের খুলনা পাবে আরও দুই ম্যাচ। ফাইনাল পর্যন্ত গেলে বাড়বে ম্যাচের সংখ্যা।
মাশরাফীকে পেয়ে সবচেয়ে নির্ভার হওয়ার কথা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। মাশরাফী প্রথমবার অনুশীলনে ফেরার দিন ফটো সাংবাদিকদের সঙ্গে আড্ডায় খুলনার অধিনায়ক বলছিলেন, বড় ভাইকে(মাশরাফী) পেলে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবে না।’ সেই মাহমুদউল্লাহর খুলনাই চার দলের মাঝে লটারি ভাগ্যে পেয়েছে মাশরাফীকে।
বহু ঝড়ের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা অদম্য এক সৈনিকের নাম মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। কঠিন বাস্তবতার সামনে পড়েছেন অসংখ্যবার। বেশিরভাগ সময় জয় করে ফিরেছেন প্রতিবন্ধকতা। পরিশ্রম, মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে ক্রিকেটের ২২ গজে এখনো তিনি অনন্য, সবার ভরসার আশ্রয়স্থল।
ওয়ানডে দলের নেতৃত্ব ছেড়েছেন। তবে দেশের হয়ে খেলার ইচ্ছেটা মরে যায়নি। ঘরোয়া ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন টাইগার পেসার। জাতীয় দলে তাকে রাখা হবে কিনা সেটি নির্ভর করছে মাঠের পারফরম্যান্স আর নির্বাচকদের উপর। প্রতিটি নতুন শুরুতেই মাশরাফী দেখিয়েছেন অনন্য কিছু। এবারও অপেক্ষা তেমন কিছুরই!