মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের ফাঁসির পরে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতরের বিবৃতিতে বাংলাদেশ ‘বিরক্ত’, তা উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে মুত্যুদণ্ড প্রদান বন্ধ করার আহ্বানেরও উত্তর দেওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়ায় জানানো হয়, মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের দেওয়া রায়ের ব্যাপারে হাইকমিশন দফতর ভুল ধারণা পোষণ করছে। ভুল ধারণার ভিত্তিতে দেওয়া প্রেস ব্রিফিংয়ের ওই বক্তব্যে বাংলাদেশ বিরক্তি প্রকাশ করছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাকা-মুজাহিদের অপরাধ সাক্ষী-প্রমাণের ভিত্তিতে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া পরে আপিল বিভাগেও পূর্ণ বেঞ্চ শুনানির পর তাদের ফাঁসির রায় বহাল রাখা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের ভিত্তিতেই সাকা-মুজাহিদের শাস্তি হয়েছে। এর সঙ্গে তাদের বর্তমান রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন, ১৯৭৩ অনুসারে, গনহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যুদ্ধাপরাধীদের গ্রেফতার, বিচার ও শাস্তি হচ্ছে।
![](https://i0.wp.com/www.channelionline.com/wp-content/uploads/2024/02/Channeliadds-Reneta-16-04-2024.gif?fit=300%2C250&ssl=1)
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গণহত্যা এবং যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক আন্তর্জাতিক আইন ‘কনভেনশন অন দ্যা প্রিভেনশন অ্যান্ড পানিশমেন্ট অব দ্যা ক্রাইম অব জেনোসাইড, ১৯৪৮’ অনুযায়ী গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য একমাত্র কার্যকর এবং সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের। সুতরাং সাকা-মুজাহিদের অপরাধের ফাঁসির শাস্তি যুক্তিযুক্ত।
সবশেষে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিচারহীনতা দূর করতে, ভুক্তভোগীদের প্রতি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে এবং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের বিচার হওয়া জরুরি ছিলো। ২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি ইরোপিয়ান পার্লামেন্টে এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
যুদ্ধাপরাধের দ্রত বিচারের মাধ্যমে যেখানে বাংলাদেশে বিচারহীনতা দূর করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে আন্তর্জাতিক কমিউনিটি সাদরে গ্রহণ করছে, সেখানে গুটিকতক গোষ্ঠী সাফাইমূলক, পক্ষপাতদুষ্ট এবং প্রমাণহীন বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিচারকাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একে খুবই দুঃখজনক বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এ ধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগকে আইন ও উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ ভুল প্রমাণিত করার ব্যাপারে নিশ্চয়তাবদ্ধ বলে সেখানে বলা হয়।
সম্পূর্ণ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন যুক্তি ও ব্যাখ্যা দিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, এসব কিছুর পরও জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতরের প্রেস ব্রিফিংয়ে দেওয়া বক্তব্য যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধেরই সমর্থন করছে কিনা।