ব্যাংকিং খাতে উচ্চ সুদহারের কারণেই খেলাপি ঋণ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বণিক বার্তা ও সিটি ব্যাংক আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন-২০২০’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন গভর্নর।
এসময় তিনি বলেন: ব্যাংকিং খাতে সুদহার তুলনামূলক বেশি থাকায় ঋণ গ্রহীতারা খেলাপি হয়ে পড়ছেন। এ কারণেই খেলাপি ঋণ বাড়ছে। যদিও আমাদের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো বুঝেও এ বিষয়ে কথা বলছে না। যেমন, ২০১৫/১৬ এর দিকেও সুদহার ১৫/১৬ শতাংশ ছিল। তখন কৃষি খাতে সুদহার কমিয়ে ৯ শতাংশ করা হয়।
এর আগে একই অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন: উচ্চ সুদহার ও চক্রবৃদ্ধি সুদহারের কারণে খেলাপি ঋণ বাড়ছে।
ব্যাংকের সুদহার ‘নয়-ছয়’ নিয়ে তিনি বলেন: ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী সুদহার বেধে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ২০১৭ সালের জুলাই থেকে সুদহার কমানোর কথা বললেও বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘ সময় পর্যবেক্ষণ করেই সুদহার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এই মুহূর্তে ব্যাংকে কোনো তারল্য সংকট নেই জানিয়ে গভর্নর বলেন: ব্যাংকগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ টাকা রয়েছে। এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। অতএব ব্যাংকিং খাতে একেবারেই তারল্য সংকট নেই।
ফজলে কবির বলেন: অনেকেই বাংলাদেশ ব্যাংকের সমালোচনা করে বলেন, এখানে সুশাসনের অভাব রয়েছে। কিন্তু সুশাসনের অভাব তো সবখানেই রয়েছে। তবে বিশেষ করে ব্যাংকের জন্য এটা সুখকর নয়।
অনুষ্ঠানে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন: বাংলাদেশ ব্যাংকের যথেষ্ট দূর্বলতা রয়েছে।
এর জবাবে তিনি বলেন: এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংক কতটা শক্তিশালী ছিল? সব বুঝেশুনেই বাংলাদেশ ব্যাংককে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআরআই’র নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, অর্থনীতিবিদ মামুনুর রশীদ, ড. নাজনীন আহমেদ প্রমুখ।