ব্লগার ও লেখক অভিজিত রায় হত্যার দায় স্বীকার করেছে আল-কায়েদা ভারতীয় উপমহাদেশ শাখা। জঙ্গি গ্রুপ নিয়ে কাজ করা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েবসাইট এসআইটিইতে শনিবার এক ভিডিও বার্তায় হত্যার দায় স্বীকার করেন আল-কায়েদা নেতা আসিম উমর। ইসলাম ধর্ম অবমাননার কারণে অভিজিতকে হত্যা করা হয় বলে তিনি জানান।
আল কায়েদার দায় স্বীকারের পরপরই বিকেলে বিভিন্ন সংস্থা ও তদন্তকারী গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ডেকে এনে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
হত্যাকাণ্ডের পর পরই টুইটারে হত্যার দায় স্বীকার করেছিলো আল-কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন আনসার উল্লাহ বাংলা সেভেন। গোয়েন্দাদের ধারণা ছিলো অভিজিৎকে হত্যা করেছে কোনো জঙ্গি সংগঠনের স্লিপার সেল সদস্যরা।
তদন্তের শুরুতেই ডিবি আটক করে উগ্রবাদী ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবীকে। দফায় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে এখনও হত্যাকারীদের সনাক্ত করতে পারেননি গোয়েন্দারা। এরইমধ্যে ওই হত্যার দায় নিলো আল কায়েদা।
মার্কিন নাগরিক অভিজিৎ হত্যা মামলা তদন্ত সহায়তা দিতে ঢাকায় এসে নিজেদের ল্যাবে আলামত পরীক্ষার আগ্রহ দেখায় মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই। সে অনুযায়ী পরীক্ষার জন্য কয়েটি গুরুত্বপুর্ণ আলামত মার্কিন ল্যাবে পাঠানো হয়।
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বের হলে কয়েক যুবক অভিজিতকে কুপিয়ে হত্যা করে। তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা ওই হামলায় আহত হন। মার্কিন সরকার পরে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যায়। চিকিৎসা শেষে এখন তিনি কিছুটা সুস্থ।
বন্যার মতো অভিজিতও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ছিলেন। ‘মুক্তমনা’ নামে তিনি একটি বাংলা ব্লগ পরিচালনা করতেন। তার লেখালেখির বিষয় ছিলো বিজ্ঞান।
অভিজিত হত্যাকাণ্ডের পর ৩০ মার্চ রাজধানীর বেগুনবাড়িতে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকেও একই কায়দায় কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সেসময় দু’জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তার হত্যার পেছনে জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম রয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীতে নিজের বাসার সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় আরেক ব্লগার আহমেদ হায়দার রাজিবকে।
রাজিব হত্যা মামলায় জঙ্গি টিম আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান মুফতি মো. জসীমউদ্দিন রাহমানীসহ আটজনের বিচার চলছে।
২০০৪ সালে অভিজিত হত্যাকাণ্ডের স্থানের কাছেই কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদকে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জার্মানিতে মারা যান তিনি।