নিখোঁজের আড়াই মাস পর বাড়ি ফিরে ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায় রোববার এক চিঠিতে অপহরণের জন্য নিজের ব্যবসায়িক অংশীদারকে দায়ী করেছেন। ওই চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন: অপহরণের পর ৮১ দিনে অপহরণকারীরা তার সম্পদ হাতিয়ে নেয়ার অনেক চেষ্টা করেছে।
ফিরে আসার একদিন পর রোববার ‘চিঠিতে’ নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন অনিরুদ্ধ রায়। তবে এতদিন তাকে কোথায়, কীভাবে তাকে রাখা হয়েছিল তা জানাননি ছয়বারের সিআইপি স্বীকৃতি পাওয়া এই ব্যবসায়ী।
গত ২৭ আগস্ট বিকেলে গুলশান-১ এর ইউনিয়ন ব্যাংকের সামনে থেকে অপহৃত হন আরএমএম লেদার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়। তার গাড়িচালকের ভাষ্য অনুযায়ী: অনিরুদ্ধ রায় নিজের গাড়িতে ওঠার সময় দু’জন লোক এসে তার সঙ্গে কথা বলেন। তারপর পাশে ডেকে নিয়ে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নেন।
রোববার আরএমএম গ্রুপের প্যাডে অনিরুদ্ধ রায় সাক্ষরিত চিঠিতে লেখা হয়: আমি অনিরুদ্ধ কুমার রায়, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরএমএম গ্রুপ। আমি ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার শিকার। আমার ব্যবসায়িক অংশীদার মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন গং আমার প্রতিষ্ঠিত তিনটি প্রতিষ্ঠান আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, আরএমএম নিট ক্লথিং লিমিটেড ও আরএমএম সোয়েটার লিমিটেড (যার সম্পদের মূল্য ১৫০ কোটি টাকার অধিক) হস্তগত করার জন্য হেন কোনো কাজ নেই, যা করেননি।
‘২৭ আগস্ট গুলশান-১-এর ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে মিটিং শেষে ফেরার পথে বিকেল সাড়ে চারটায় ওই বিল্ডিংয়ের নিচ থেকে আমাকে অপহরণ করা হয়। সম্ভবত ব্যবসায়িক প্রতিহিংসার কারণে এমনটা হয়েছে বলে আমি আশঙ্কা প্রকাশ করি।
আমার অবর্তমানে আমাকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে। যার মধ্যে
ক) আমার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এলআইবি-এর শিপমেন্ট সার্টিফিকেট প্রদানে বিএফএলএলএফইএ এর চেয়ারম্যান হিসেবে অনৈতিকভাবে বাধা প্রদান
খ) নিয়ম বহির্ভূতভাবে অন্য কোম্পানি থেকে পাওনা ৫ কোটি টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার পরিবর্তে নিজের নামে গ্রহণ
গ) ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের হুমকি দেওয়াসহ বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করা
ঘ) আমার অনুপস্থিতিতে আমার অনুমতি ব্যতিরেকে আমার অফিস কক্ষ থেকে জরুরি নথিপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উল্লেখযোগ্য।
অপহরণ করার পর তারা আমার সমুদয় সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য নানাবিধভাবে চাপ প্রয়োগ এবং আমি তা দৃঢ়তার সঙ্গে মোকাবিলা করি। সৃষ্টিকর্তার কৃপায় গত ১৭ নভেম্বর বাসায় ফিরি।’
ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা চেয়েছেন।
এর আগে অনিরুদ্ধ রায়ের পরিবারের বরাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন: শুক্রবার ভোরে তিনি গুলশানের বাসায় ফিরে আসেন বলে তার স্ত্রী শাশ্বতী রায় থানায় জানিয়েছেন। দু’য়েকদিনের মধ্যে মধ্যে পুলিশের পক্ষ থেকে অনিরুদ্ধ রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হবে।